রাবির অগ্রণী ব্যাংকে যৌন হয়রানি
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০১৬, ১৭:৩১
ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে এসেছিলেন মেয়েটি। কিন্তু ব্যাংকের ভেতরটা তখন মানুষে ভর্তি। তিল ধারণের ঠাঁই পর্যন্ত নেই। এদিকে টাকা জমা দেয়ার শেষ তারিখ হওয়ায় ফিরেও যাওয়ারও জো নেই। বাধ্য হয়ে হুড়োহুড়ির মধ্যে টাকা জমা দিতে গেলেন তিনি। আর তখনই ঘটলো বিপত্তি। পেছন থেকে অপরিচিত কোনো এক যুবক পিঠে হাত দিতেই মেয়েটি চিৎকার দিয়ে উঠলেন। অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখার রবিবারের চিত্র এটি। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বা কেউ এগিয়ে এসে দেখলোও না কী ঘটেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এমন ঘটনা সচরাচর ঘটেই চলেছে অগ্রণী ব্যাংক রাবি শাখায়। তবে এসব বিষয় যেন চোখেই পড়ছে না কর্তৃপক্ষের কারোর। নেই সুষ্ঠুভাবে ব্যাংকের কাজ সম্পন্ন করার কোন পদ্ধতি। আর অপরিকল্পিত সেবাদানের কারণে ছাত্রীদেরকে মাঝেমধ্যেই যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার বেলা ১২টার দিকে ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় তিন‘শ শিক্ষার্থী ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে আছেন ফরম পূরণের টাকা জমা দেয়ার জন্য। যেখানে স্বাভাবিকভাবে অর্ধশত মানুষ কাজ করতে পারে। নির্দিষ্ট কোন লাইনেও দাঁড়ায়নি কেউ। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও নেই কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম। ফলে ভিড়ের মধ্যে কেউই ঠিকমত কাজ করতে পারছেন না।
ব্যাংকে টাকা জমা দিতে আসা ইতিহাস বিভাগের একজন ছাত্রী বলেন, পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দিতে এসেছিলাম। কিন্তু এতো ভিড়ের মধ্যে কাজ করা সম্ভব না। আর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা কোন লাইন না থাকায় পড়তে হচ্ছে বিপাকে। আলাদাভাবে লাইন করে দাঁড়ালে শৃঙ্খলা ঠিক থাকতো। কিন্তু কর্তৃপক্ষও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
ফরম পূরণের শেষ দিনে টাকা জমা দিতে এসেছিলেন আরবী বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তুহিন মিয়া। তিনি বলেন, আজই আমার টাকা জমা দেয়ার শেষ দিন ছিলো। তাই বাধ্য হয়ে লাইনে দাঁড়াই। কিন্তু একটু পরই দেখলাম কেউ লাইন মানছে না। সবাই আগে দেয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে অনেকে মেয়েদের গায়ে হাত দিচ্ছে। আমরা কয়েকজন বাঁধা দিয়েছি।
অগ্রণী ব্যাংক রাবি শাখার ব্যবস্থাপক বজলুর রশিদ বলেন, ছুটি শেষে ব্যাংক খোলায় প্রথম দিন বেশি ভিড় হয়েছে। এছাড়া প্রতি মাসের ২৯ তারিখ বেতন তোলার দিনও এমন হয়। তখন অল্প জায়গায় অনেক মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। এসব সমস্যা নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে শীঘ্রই আলোচনা করবো।