বাজেট ২০১৭-১৮
নারী উন্নয়নে ১ লাখ ১২ হাজার ১৯ কোটি টাকা
প্রকাশ : ০২ জুন ২০১৭, ১৭:০৫
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নারী উন্নয়নে ১ লাখ ১২ হাজার ১৯ কোটি টাকার জেন্ডার বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন।
তিনি ১ জুন (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে ৪৩টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের জন্য পৃথক জেন্ডার বাজেট উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে ২৭টি মন্ত্রণালয় ও ১৬টি বিভাগকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। এর মধ্যে নারী উন্নয়নে বরাদ্দ ১ লাখ ১২ হাজার ১৯ কোটি টাকা যা মোট বরাদ্দের ২৭.৯৯ শতাংশ এবং জিডিপি’র ৫.০৪ শতাংশ। তিনি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের জন্য ৯২ হাজার ৭’শ ৬৫ কোটি টাকার নারী উন্নয়ন বাজেট উপস্থাপন করেন।
গতবারের মতো এবছরও জেন্ডার বাজেটকে তিনটি অংশে ভাগ করে নারী উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর প্রথম অংশে নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চারটি মন্ত্রণালয় ও পাঁচটি বিভাগের জন্য বাজেট প্রস্তাব করা হয়। এগুলো হলো; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। এবছরের নারী উন্নয়ন বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে দুটি বিভাগ এবং শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে দুটি বিভাগকে জেন্ডার বাজেটে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
দ্বিতীয় অংশে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমবাজার ও আয়বর্ধক কাজে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আটটি মন্ত্রণালয় ও একটি বিভাগের জন্য বাজেট প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
জেন্ডার বাজেটের তৃতীয় অংশে সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে নারীর সুযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়া হয়। এতে ১৫ টি মন্ত্রণালয় ও ১০ টি বিভাগের জন্য জেন্ডার বাজেটের প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, ভূ’মি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, সড়ক ও পরিবহন বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এবছর জেন্ডার বাজেটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জায়গায় জননিরাপত্তা বিভাগ ও সুরক্ষা সেবা বিভাগ জেন্ডার বাজেটে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
অর্থমন্ত্রী ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রথম ৪টি মন্ত্রণালয়ের জন্য জেন্ডার বাজেট প্রস্তাব করেন। ঐ বছর নারী উন্নয়নে বরাদ্দ ছিলো ২৭ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। পরবর্তীতে ২০১০-১১ অর্থবছরে জেন্ডার বাজেটে ১০ টি মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৪ হাজার ২২১ কোটি টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে ২০ টি মন্ত্রণালয়ে ৪২হাজার ১’শ ৫৪ কোটি টাকা, এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৫ টি মন্ত্রণালয়ে ৫৪ হাজার ৩’শ ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪০টি মন্ত্রণালয়কে অন্তুর্ভুক্ত করে জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন করা হয়। এই ৪০টি মন্ত্রণালয়ের জন্য ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬৪ হাজার ৮৭ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭১ হাজার ৮’শ ৭২ কোটি টাকা এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৯২ হাজার ৭’শ ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।