নারীদের কার্যকরী অংশগ্রহণের মাধ্যমে জেন্ডার বাজেট

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০১৮, ১৬:৫৬

জাগরণীয়া ডেস্ক

বাংলাদেশের জনসেবা খাতে আর্থিক ও সামাজিক বিনিয়োগ কমছে। পাশাপাশি অন্তর্ভূক্তিমূলক নীতি, পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছতা এবং জাবাদিহিতার অভাবে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন সাধারণ মানুষ। এক্ষেত্রে নারী সেবাগ্রহীতার অভিজ্ঞতা আরও খারাপ। জনসেবা খাতে সরকারের বাজেট, উদ্যোগ, বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা পর্যালোচনা করে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে একশনএইড বাংলাদেশ। ২৮ মার্চ (বুধবার) ঢাকার ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আয়োজিত ‘জেন্ডার সংবেদনশীল জনসেবা ও অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি’ বিষয়ক দু’দিন ব্যাপি একটি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই পর্যবেক্ষন তুলে ধরা হয়। 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জনসেবা খাতের পরিস্থিতি তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপক নুজহাত জাবিন। সম্মেলনের ধারণাপত্রে বলা হয়, সরকারি জনসেবাসমূহ, বিশেষ করে স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও নগরসেবায় বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের চিত্র তুলে ধরা হয়। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। যেখানে ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দক্ষ ও পেশাজীবী সেবাদাতার অভাব। শিক্ষাক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যেখানে ২০০৯-১০ অর্থ বছরে ছিল ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।

আবার কেন্দ্রীভূত বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ব্যবস্থার ফলে নাগরিকদের সঠিক চাহিদার প্রতিফলন বাজেটে হচ্ছে না। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবহন সেবার ক্ষেত্রে সরকারের দূর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে দিন দিন সেবা ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও সেবা বেসরকারিকরণের ফলে সেবা নিতে খরচ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। ইন্টারন্যাশনাল বাজেট পার্টনারশিপ ওপেন বাজেট সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, অংশগ্রহণ সূচকে বাংলাদেশের অর্জন ১০০-তে মাত্র ১৩, স্বচ্ছতার সূচকে প্রাপ্তি ১০০-তে ৪১, যার অর্থ তথ্য সরবরাহে বাংলাদেশ এখনও অনেক দুর্বল।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘সরকার নির্বাচিত হয় মানুষের সেবার জন্য। আর দেশের সকল নাগরিকের জন্য একই ধরণের সেবা নিশ্চিত করা উচিত। কিন্তু সেবা দেয়ার জন্য যেই পরিকল্পনা করা হয় তা আসলে সবার কথা চিন্তা করে করা হয় না। ১০ বছর আগের বাজেটে জনসেবা খাতে যে হারে বরাদ্দ ছিল বর্তমানে যে ঠিক সেই হারে বরাদ্দ দিতে হবে, তা ভাবা ঠিক না। বাস্তব চিত্র হলো, প্রয়োজন অনুসারে জনসেবা খাতে বরাদ্দ ও বাস্তবায়ন হয় না।’

জনসেবা খাতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন পক্ষের সমন্বয় বাড়াতে ‘জেন্ডার সংবেদনশীল জনসেবা ও অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি’ নামের দু’দিন ব্যাপি এই সম্মেলন চলছে। একশনএইড বাংলাদেশ, ক্রিশ্চিয়ানএইড বাংলাদেশ, কেয়ার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আরবান ফোরাম ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভার্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট এই সম্মেলনের আয়োজক।

সূত্র: জনকণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত