সুরভি রায় এর ৩টি কবিতা
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ০১:৪২
(১)
খুব নাকি শীত
কুয়াশা ভেদ করে সূর্য পৌঁছাতে পারছে না এখানে!
তুমি কেমন আছো?
হৃদপিন্ড কি জমে গেছে তোমার?
চোখ দুটো ঠিক রেখো কিন্তু,
নইলে আকাশ দেখবে কেমন করে?
ফুসফুসটারও যত্ন নিও,
বিশুদ্ধ বাতাস খুব দরকার তোমার বুকের পাঁজরের।
কিন্তু, হৃদপিন্ডটাকে কি করবে!
ইস্, মনেই ছিল না জানো,
খেয়ালই করিনি!
হৃদপিন্ডটা তো লাল।
লাল আমার খুব পছন্দের রঙ।
লাল আমি ভালোবাসি ভীষণ,
লাল কৃষ্ণচূড়া, লাল পাল ওড়ানো নৌকা,
লাল পাহাড়, লাল খোঁপায় গোঁজা জবা ফুল,
লাল একটা সূর্য, সবুজের ভেতরের গাঢ় লাল
এরা সবাই আমাকে টানে।
তুমি বরং,
বুকের লালটা হাতের মুঠোয় নাও।
দেখো, ভীষণ উত্তাপ হবে ওঁর।
কেন বারবার মনে করিয়ে দিতে হয় বল তো!
জানো না, এখনই উত্তাপ বিলাবার প্রচন্ড সময়।
গোধূলী আর ঊষার লাল দিগন্ত আমাকে টেনে নামায় পথের ধূলায়,
যেখানে কৃষ্ণচূড়া বুক পেতে দিয়েছে...
পথ ঠিক করে নেবার মুহূর্তে,
হৃদপিন্ড তুলে নিও হাতে।
চোখে মেখে নিও লালাভ উত্তাপ।
এখন যদি সময় না হয়, তবে জেনো সময় আসবে না কোনদিন।
(২)
শোন,
এইসব অন্ধকার ভেঙ্গে দেবো
হাতরে টেনে বের করে নেবো তোমার হাত।
খুঁজতে জানি আমি, পথ হারাবো বলে দু'পা পেছানোর লোক আমি নই।
তুমি ঝাপসা হয়ে যাবে বলে, চোখ বুজে তোমায় দেখবো এমনটা আমি নই।
সমস্তটা নিংড়ে নিতেই ভালোবাসি
অবাধ্যতা আমার শিয়রে ও শিরায়
আকাশের বুকে মেঘ যেমন করে উদ্দাম ডানা ঝাপটায়
কিছুটা সেরকম অস্থির আমি।
শুধু তোমার স্থবিরতায় আমি রক্তজবা হই,
কি করে পার তুমি বল তো!
খাঁচার গরাদগুলো যত্ন করে যে পাখি, ওড়ার আকাঙ্খা তার অন্তরে কি থাকে!
ভাঙ্গো,
অস্থির মতি হও,
এই সব অর্গল ভাঙ্গবো বলেই তো আকাশ
সমুদ্রের ঢেউ হও, আছড়ে পড়ো বারবার
সূর্যের মত প্রখর হও,
তবেই না মাটি ফুঁড়ে উঠবে আনন্দের অঙ্কুর।
(৩)
এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকি
তীরের ফলা তাক করে রাখি
শুধু, ঘড়ির কাঁটাকে থামানো যায় না....
টপ টপ টপ করে জল পড়ে যায়
স্থির হয় না কিছু,
এ বিষম দায়।
এখানে আকাশপথের শেষ কোথায়
এখানে সব এত্ত দূর কেন?
পথের দিশা পাই না কেন??
এখানে বাতাস এত্ত গাঢ় কেন??
ছায়া ঘন হয় না যেইখানে
গোধূলী লাল হয় না যেইখানে
সেখানেই অপেক্ষা করো
জলে ভিজিয়ে মুখ ধোবো
নোনা জলের স্বাদ ভুলিয়ে দেবো, নিশ্চয়।