আফগানিস্তানে নারীদের পথপ্রদর্শক নেগিন
প্রকাশ : ২৯ মে ২০১৬, ১৮:৩৪
আফগানিস্তান দেশটির কথা শুনলে যুদ্ধ, হানাহানি ও তালেবান যোদ্ধাদের কথা ছাড়া কিছুই যেন আর কল্পনায় আসে না। আফগানিস্তানে শাহের শাসন শেষ হওয়ার পর তালেবান শাসন শুরু হলে সেখানে সবরকম গান বাজনা ও মেয়েদের লেখাপড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়, সেখানেই ছোট ছেলে মেয়েদের পিয়ানো বাজানোর দৃশ্য পুরো আফগানিস্তান সম্পর্কে ধারণাই পাল্টে দেয়।
এই ধর্মীয় জঙ্গিবাদ আর উগ্র সাম্প্রদায়িকতার আখড়া আফগানিস্তানেই নারী পথপ্রদর্শক হিসেবে যার কথা বলা যায় সে আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিকের একজন ছাত্রী, ১৭ বছর বয়সের নেগিন খপলওয়াক। বর্তমানে নিযে শিল্পচর্চার পাশাপাশি এই ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীদেরও গান ও বিভিন্ন রকম বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখান নেগান।
আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশের একটি রক্ষনশীল এলাকার মেয়ে নেগান। তালেবান আমলে গান তো দূরের কথা, কুনার প্রদেশের মেয়েরা স্কুলে যাওয়ার কথাই কখনো চিন্তায় আনতে পারতো না। কিন্তু সঙ্গীতের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা থাকায় নিজের স্বপূরণের জন্য কাবুলে চলে যায় নেগান। আর এতে তাকে সাহায্য করে তার বাবা।
নয় বছর পর থেকে আর পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি নেগানের পক্ষে। এই কারণে তার আগ্রহ বেড়ে যায় টিভি দেখা ও গান শোনার প্রতি। এরপর আফগান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটে অডিশন দিলে চার বছরের জন্য সেখানে গান শেখার সুযোগ পায় সে। কিন্তু তখন সেখানে চার ভাগের মাত্র একভাগ ছিল নারী। পরিবার থেকে বাধা আসার কারণে ছয় মাসের মধ্যেই তাকে এই ইনস্টিটিউট ছেড়ে দিতে হয়। পরে তার বাবার প্রচেষ্টায় সে আবার ফিরে আসে।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক আহমেদ সারমাস্ত বলেন, আমাদের রক্ষনশীল পরিবারগুলোর এটা একটা সাধারণ সমস্যা। যার ফলে তারা চাপ প্রয়োগ করে পিছিয়ে রাখে আমাদের সমাজের নারীদের। গত বছর এখানকার একজন ছাত্র বাইরে কনসার্ট করতে গেলে নির্মম মৃত্যুর শিকার হয়।
তিনি আরো বলেন, পরিবারের চাপে যেসব মেয়েরাতাদের প্রতিভা প্রকাশ করতে পারে না, নেগিন সে সকল মেয়দের পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচিত হবে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালে আফগানিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে নেগিন নিউইয়র্কে একটি কনসার্ট করার সুযোগ পায়। ভবিষ্যতে তার এই প্রচেষ্টা আরো প্রসারিত করার ইচ্ছা আছে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।