রাস্তায় ফেলে দেওয়া মেয়েটি এখন সুপার মডেল
প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ২০:১৭
দুই পা নেই, তো কি হয়েছে? দুই হাত তো আছে। সেইসঙ্গে মনোবল ও ইচ্ছাশক্তির জোরেই প্রতিবন্ধী হয়েও অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই নারী। দুই পা ছাড়াই তার জন্ম হয়। বাবা-মা এমন পঙ্গু সন্তানকে বোঝা ভেবে মাত্র এক সপ্তাহ পরই রাস্তায় ফেলে যায়। বর্তমানে মাসে ৫০ লাখ টাকা উপার্জন তার।
২৩ বছর বয়সী এই সুপার মডেলের নাম সেসর। ১৯৯৬ সালে জন্ম তার। বর্তমানে তিনি একজন সুপার মডেল। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এরইমধ্যে চমকে দিয়েছেন গোটা বিশ্বকে। সেসরের জন্ম থাইল্যান্ডে। জন্ম থেকেই শারীরিকভাবে পঙ্গু মেয়ের বাবা-মা তাকে জন্মের এক সপ্তাহ পরই একটি বৌদ্ধ মন্দিরের পাশের রাস্তায় ফেলে চলে যান।
এরপর শিশু সেসরের ঠিকানা হয় অনাথ আশ্রমে। সেখান থেকেই তাকে দত্তক নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান জিমি ও মারিয়ান সেসর নামের এক দম্পতি। সন্তান স্নেহে বড় করেন বিকলাঙ্গ মেয়েটিকে। সেসর আজ বিভিন্ন পোশাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সুপরিচিত মডেল। অন্তর্বাসের মডেল হিসেবে কাজ করেন তিনি। এখন প্রতিদিন তার উপার্জন প্রায় এক হাজার ডলার।
সেসর জানান, শুধু বিজ্ঞাপন থেকেই মাসে ৫০ লাখ টাকা অর্থাৎ ৬০ হাজার ডলার আয় করেন। দুই পা ছাড়াও যে সুন্দরী ও আকর্ষণীয় হওয়া যায় তার নমুনা সেসর। আর তাইতো তিনি বলেন, সুন্দরী হতে কি সত্যিই পা দরকার? পা ছাড়াই আমি যথেষ্ট সুন্দরী। এই সাহসী নারী ভলকম, নাইক এবং রিপ কার্ল গার্ল প্রতিষ্ঠানগুলোর মডেল হয়েছেন।
১৫ বছর বয়সে সেসর তার মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। বিলাবং কোম্পানির হয়ে স্পোর্টস ব্র্যান্ডের মডেলিং করেন তিনি। এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক মডেলিংয়ের প্রস্তাব পেয়েই যাচ্ছেন সেসর। নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করে অর্থ উপার্জন এখন তার নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ফটোশ্যুটের বিভিন্ন লুকে সবাই আকৃষ্ট হতে বাধ্য। আর সেসব ছবিই সেসরকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।
প্রতিবন্ধকতাকে ছাপিয়ে সেসর এখন জয়ী। শুধু মডেলিংই নয় খেলাধুলাতেও নিজের দক্ষতা দেখাতে চান এই নারী। আর তাইতো গত বছর সাউথ কোরিয়াতে অনুষ্ঠিত উইনটার প্যারাঅলিম্পিক্সে যোগ দেন মোনো-স্কাই প্রতিযোগিতায়। সেসরের মতে, আমার কখনো ইচ্ছা ছিল না মডেলিং করব। অনেকটা ভাগ্যের জোরেই এটা সম্ভব হয়েছে। নিজেকে আমি ভিন্নভাবে এই সমাজে উপস্থাপন করতে চাই। এজন্যই সার্ফিং, স্কাইয়ার শিখেছি। কখনো সেসর হুইলচেয়ারে চলাফেরা করে আবার কখনো হাতের উপর ভর দিয়ে চলে থাকেন।
প্রেমিকও অবশ্য সেসরকে খুবই সাহায্য করে। তার নাম ব্রায়ান ওয়াটার্স। সেসরের মডেলিং দেখেই মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন ব্রায়ান। মডেলিংয়ের সময় বাদে সেসর মেকআপ ছাড়াই থাকতে পছন্দ করেন। বর্তমানে সে একটি বই লেখায় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। একজন এতিম থেকে মডেল হয়ে উঠার গল্পই থাকবে সেসরের বইটিতে।
সূত্র: উদ্যোক্তার খোঁজে