বাবার সৎকারে শ্মশানে কন্যারা, ‘একঘরে’ করেছে সমাজ

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

পিতার মৃত্যুর পর তার মরদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়াসহ সব ধরণের সৎকার কাজ করায় সমাজের তোপের মুখের পড়েছেন রাজস্থানের চার কন্যা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, রাজস্থানের বুন্দা নামে প্রত্যন্ত এক গ্রামের ৫৮ বছর বয়সী দূর্গাশংকর রেগা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন বার্ধ্যক্যজনিত রোগে। মৃত্যু আসন্ন জেনে চার কন্যা সন্তানের জনক দূর্গাশংকর অন্তিম ইচ্ছা প্রকাশ করেন মৃত্যুর পর মেয়েরাই যেন তার সৎকার করে। পিতার এমন ইচ্ছে পূরণ সমস্যা দেখেননি মেয়েরা। আত্মীয় পরিজন বা পরিবারের অন্য সদস্যদের কেউই তার মধ্যে কোনও অন্যায় দেখেননি। কিন্তু ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর হুমকি দিতে থাকে গ্রামের মোড়ল-মাতব্বররা।

গত ২৮ জুলাই (শনিবার) দূর্গাশংকরের মৃত্যুর পর সমাজের কুসংস্কারের বিপক্ষে দাঁড়ায় চার কন্যা। বাঁশের মাচায় শোয়ানো বাবার দেহ চার দিকে চার বোন কাঁধে করে নিয়ে গিয়েছেন শ্মশানে। বাবার শেষ ইচ্ছা পালনের তাগিদ হোক বা সমাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, পিছপা হতে রাজি নন কেউ।  নারী পুরুষ বিভেদের মুখে আগুন দিয়ে বাবার মুখাগ্নি করেছেন মেয়েরা।

কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার মূলে এমন কুঠারাঘাত সহ্য না হওয়ায় ঐ পরিবারকে ‘একঘরে’ করে রাখার ফতোয়া দিয়েছে গাঁয়ের মোড়লরা। গোটা গ্রামের থেকে ঐ পরিবারটি একঘরে, আলাদা। তাদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখা যাবে না। শুধু তাই নয়, গ্রামের কমিউনিটি বাথরুমে স্নান করাও নিষেধ তাদের। আর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেও গ্রামের কেউ গেলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বড় মেয়ে মিনা বলেছেন, বাবার কাজ সেরে আসার পরই আমাদের ক্ষমা চাইতে বলে মোড়লরা। কিন্তু আমরা ক্ষমা চাইনি। কারণ, আমরা কোনও অন্যায় করিনি। কোনও অপরাধ করিনি।

এদিকে ‘একঘরে’ করে রাখার এই বিধানে পুলিশ বা প্রশাসনের কর্তারা কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত