বাংলাদেশের প্রথম ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ উপাধি পেলেন নাজমুন নাহার
প্রকাশ : ১২ জুন ২০১৮, ১৫:৫৫
ভ্রমনের নেশায় শততম দেশ ঘুরে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের নাজমুন নাহার।
ভ্রমনের মধ্য দিয়ে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সাংস্কৃতি, প্রকৃতি, দেশের মানুষ সম্পর্কে জানানো আর সেই দেশে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোটাই হলো লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যে গত ১ জুন বাংলাদেশ সময় বিকাল তিনটার দিকে আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়েতে পতাকা ওড়ান ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ লক্ষ্মীপুরের নাজমুন নাহার। শততম দেশে প্রবেশের সময় তার সাথে জাম্বিয়ার গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
শততম দেশ জিম্বাবুয়েতে পা রেখেই নাজমুন নাহার অডিও বার্তার মাধ্যেমে গণমাধ্যমকে তার সাফল্যের কথা জানান।
উচ্ছ্বসিত নাজমুন নাহার বলছিলেন, ১০০তম দেশ ভ্রমণ করতে পেরে আমি আনন্দিত। বিশ্বের ১০০ দেশে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো নিঃসন্দেহে যে কারও জন্য গর্বের ব্যাপার, আমারও তা-ই। জাম্বিয়ার লিভিংস্টোন শহরের গভর্নর আমাকে সংবর্ধনা দিয়েছেন, তাই জিম্বাবুয়েতে বেশি সময় থাকতে পারিনি। ৫ জুন আবার জিম্বাবুয়ে ভ্রমণে যাব।
তার সেই অডিও বার্তায় নাজমুন নাহার বলেন, এই মুহূর্ত শুধু আমার নয়, এই গৌরবময় মুহূর্তের অংশীদার বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ, যারা একটি বাংলাদেশের স্বাধীন পতাকা পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করেছেন, প্রাণ হারিয়েছেন। আজ এই মুহূর্তে আমি সেই সব শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কথা স্মরণ করছি।শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একটি স্বাধীন দেশে আমার জন্য হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশের পতাকা আমি পেয়েছি বলেই আজ শততম দেশে সেই গর্বিতময় পতাকা নিয়ে আমি পৌঁছাতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, ১ জুন, বাংলাদেশের পতাকা উড়লো একশতম দেশ জিম্বাবুয়েতে। পৃথিবীর বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের উপর যে ব্রিজটি রয়েছে, তা আমার শততম দেশের সাক্ষী হয়ে রইলো। পূর্ণ হলো আমার যাত্রার শততম ইতিহাস। হৃদয়ে বাংলাদেশে দুচোখে আমার একশতম দেশ দেখা পূর্ণ হলো।
বাংলাদেশি নারী হিসেবে প্রথম এমন বিরল কৃতিত্ব অর্জন করলেন নাজমুন নাহার। শুধু দেশ ভ্রমণই নয়, ‘ইনসপিরেশন গ্লোবাল ফাউন্ডেশন’ নামের সচেতনতামূলক সংগঠনও গড়ে তোলেছেন তিনি। এর মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন স্কুল ও অনাথ আশ্রমে যান। বর্ণনা করেন নিজের ভ্রমণ-অভিজ্ঞতা।
উল্লেখ্য, ৩৮ বছর বয়সী নাজমুন নাহারের বিশ্বভ্রমণের শুরুটা ২০০০ সালে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় প্রথম ভারত ভ্রমণ করেন তিনি। ২০০৬ সালে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যান সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি ২০১৬ ও ২০১৭ সালেই ঘুরেছেন ৩৫টি দেশ। বছরের শুরুতেই ৯৩টি দেশ ঘুরার রেকর্ড ছিল। লক্ষ্য ছিল এ বছরের মধ্যেই শততম দেশ ভ্রমণ। শততম দেশ হিসাবে আফ্রিকার কোনো দেশ ভ্রমণ করার ইচ্ছে ছিল তার।