হজে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে #মস্ক-মি-টু
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৯:০৪
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হজের মতো পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েও যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় নারীদের। অনেকদিন ধরেই অনেকে এরকম অভিযোগ করে আসলেও ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতা ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ ইত্যাদি নানা কারণে তাদের বক্তব্য চাপা পড়ে গেছে। তবে আর মুখ বুজে বসে থাকছেন না মুসলিম বিশ্বের নারীরা। সম্প্রতি আবারো হজে যৌন হয়রানির বিষয়টি সামনে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন একদল মুসলিম নারী। খবর বিবিসির।
২০১৩ সালে হজ করতে গিয়ে যৌন হেনস্থার শিকার মিসরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নারীবাদী লেখিকা এবং সাংবাদিক মোনা এলতাহাউই প্রথম এই অভিজ্ঞতার কথা জানান। এবার তার হাত ধরেই অনেকটা 'মি-টু' আন্দোলনের অনুকরণে সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলন শুরু হয়েছে হ্যাশট্যাগ 'মস্ক-মি-টু'।
৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই আন্দোলন এর মাত্র ২৪ ঘন্টায় টুই্টারে এই হ্যাশট্যাগটি দু হাজার বারের বেশি রি-টুইট করা হয়েছে। ফার্সি ভাষায় টু্ইটারে এটি এখন শীর্ষ দশটি ট্রেন্ডের একটি।
মূলত এই হ্যাশট্যাগে হজের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে কিভাবে ভিড়ের মধ্যে অপ্রীতিকর স্পর্শ, ধাক্কা কিংবা ইচ্ছে করে শরীরে শরীর ঘষা হয়েছে, তার বর্ণনা তুলে ধরেছেন অনেক নারী। ইরান, সৌদি আরব, মিশর এবং আফগানিস্তানের মতো রক্ষণশীল মুসলিম দেশের এসব নারীরা অভিযোগ করেছেন ইসলামের বিধান মেনে পোশাক পরার পরও তারা যৌন হয়রানি থেকে রক্ষা পান না।
ফারানাক আমিদি নামে একজন লিখেছেন, "মস্ক-মি-টু আন্দোলন আবারও প্রমান করেছে যে মেয়েরা পোশাকে কতটা রক্ষণশীল তার সঙ্গে যৌন হয়রানির কোন সম্পর্ক নেই। মেয়েরা কি পরছে সেটা নয়, পুরুষদের আসলে মেয়েদের কি চোখে দেখার এবং কি আচরণের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, তার সঙ্গেই এর সম্পর্ক।"
রুবাহদখত নামে একজন লিখেছেন, "সৌদি আরবের মদিনায় এক যুবক আমার শরীর স্পর্শ করেছিল। তখন আমার বয়স ছিল ১৫। আর লোকটির বয়স হবে বিশের কোঠায়। আমি ভেবেছিলাম মদিনা একটি নিরাপদ নগরী। কিন্তু আমি আসলে ভুল জানতাম। আমি এ ঘটনা কখনোই ভুলবো না এবং ক্ষমা করতে পারবো না"।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় 'মস্ক-মি-টু' আন্দোলনের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন অনেকে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক শুরু করার জন্য তারা মার্কিন লেখিকা মোনা এলতাহাউইর সমালোচনা করছেন।