সন্তানের ধর্ষণের বিচার চেয়ে হুমকিতে মা
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০১৬, ১৩:১৩
ঢাকার সাভারে ১১ বছরের কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করায় শিশুটির মাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ দিকে আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী। এরই মধ্যে হুমকির কারণে ভয় পেয়ে মেয়েটিকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, গত ১০ জুলাই (রবিবার) সন্ধ্যায় মামাতো ভাই সোহেলের সঙ্গে খালার বাড়িতে যায় তার মেয়ে। এসময় সড়কের পাশে আড্ডারত সোহাগ, তার দুই বন্ধু শুশান্ত ও শান্ত তাদেরকে আটকায়। সোহেলকে বেঁধে রেখে একটি বাড়িতে নিয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে তারা। পরে সোহেলকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার দিন গভীর রাতে তার মেয়েকে বাসার সামনে রেখে যায় সোহাগ ও তার সঙ্গীরা। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১১ জুলাই (সোমবার) সকালে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় মেয়েটিকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই ঘটনাটি পুলিশকে জানায়।
দুদিন পর চারজনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেন শিশুটির মা। পরদিন সকালে শিশুটিকে শারিরীক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি)। কিন্তু শুধুমাত্র মেডিকেল রিপোর্টের জন্যই ঘটনার একমাস পেরিয়ে গেছে। আর ঘটনার সঙ্গে আসামিরাও ঘুরে বেরাচ্ছে প্রকাশ্যে।
মামলার বাদি ওই নারী জানান, মামলা তুলে নিতে আপস করার জন্য তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আশুলিয়ার চারালপাড়ার একটি টিনসেডের ঘরে দুই মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন তিনি। এর আগে পোশাক কারখানায় কাজ করলেও তা বখাটেদের যন্ত্রণায় তাকে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়।
মেয়েটির মা জানান, মামলা তুলে নিতে হুমকির পাশাপাশি এলাকাবাসীর কটূকথায় টিকতে পারছেন না তিনি। উপায় না দেখে মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ করে এক স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়েছেন। তবে আসামি সোহাগ বলছেন, আপসে রাজি না হলে এলাকা ছাড়া করা হবে মেয়েটির মাকে।
আসামি সোহাগের বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় এ বিষয়ে এলাকাবাসী কোনো কথা বলতে না চাইছেন না।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, জনতা হাউজিংয়ের একটি কক্ষে মেয়েটিকে ধর্ষণের কথা এলাকার সবাই জানে।
ধর্ষিতা পরিবারের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমান দায়সারা জবাব দেন। তিনি বলেন, ধর্ষিতা শিশুর মামাতো ভাই সোহেল মামলার প্রধান সাক্ষী। কিন্তু ঘটনার পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রতিবেদন এখনও হাতে পাইনি। তাই আসামি আটক করা সম্ভব হয়নি।
মামলা তুলে নিয়ে আপস করতে আসামিদের চাপ আর হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা মাতউর বলেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। শিগরিই আসমিদের আটক করা হবে।’