রাঙামাটিতে ফের পাহাড়ধস
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০১৭, ১৯:১৫
রাঙামাটিতে আবার পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। ৩ জুলাই (সোমবার) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এতে এখনও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে টানা বৃষ্টি থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর ১২টার দিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের মানিকছড়ির দেপ্পোছড়ি এলাকায় একটি পাহাড়ের অংশবিশেষ ধসে পড়ে। এতে প্রায় এক ঘণ্টা ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকে।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানান, পাহাড়ধসের পর রাস্তা পরিষ্কার করে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সড়ক ও জনপদ (সওজ) রাঙামাটি কার্যালয়ের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. মুসা জানান, ৩ জুলাই (সোমবার) দুপুর ১২টার দিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের মানিকছড়ির দেপ্পোছড়ি এলাকায় একটি পাহাড়ের অংশবিশেষ ধসে পড়ে। এতে প্রায় এক ঘন্টা ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সওজ বিভাগের লোকজন ধসে পড়া মাটি সরিয়ে ফেললে পুনরায় ওই সড়কে পুনরায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গত ১৩ জুন পাহাড় ধসের ঘটনায় রাঙামাটি শহরের ভেদেভদী, যুব উন্নয়ন বোর্ড শিমুলতলী, রুপনগর, মুসলিম পাড়া, মোনঘর এলাকা, ওমদা মিয়া হিলসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্থ ৩ হাজার ২শ জন নারী-পুরুষ ও শিশু আশ্রয় নেন। তবে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হওয়ায় গেল ২ জুলাই (রবিবার) রাঙামাটি সরকারি কলেজ ও বিএডিসি আশ্রয় কেন্দ্রসহ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র থেকে কিছু পরিবার নিজ বাড়ি ঘরে ফিরে গেছেন। তবে আজ ৩ জুলাই (সোমবার) থেকে আবারও দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ও ঝুকিপুর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করায় আবারও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন।
এই ধরনের বৃষ্টিতে সবার মধ্যেই নতুন করে পাহাড়ধসের আতংক সৃষ্টি হয়েছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান জানান, বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের আশংকায় ঝুকিপুর্ণ এলাকায় যারা বসবাস করছে তাদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে মাইকিং করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পৌর এলাকায় কোথায় কোথায় ঝুকিপুর্ণ অবস্থায় লোকজন বসবাস করছে তা দেখতে এবং ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ কেন্দ্রে নিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যাতে পরবর্তীতে এ ধরনের পাহাড় ধসে কোন লোকজন দুর্ঘটনায় শিকার না হন।
তিনি আরো বলেন, বৃষ্টিপাতের কারণে পুর্নবাসন কাজে হাত দেয়া যাচ্ছে না। তবে এ মাসের মধ্যে পূর্নবাসনের কাজটি শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই (বুধবার) গঠিত কমিটি রাঙামাটি সফরে আসবেন। এ কমিটি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন, কেন পাহাড় ধস ঘটনা ঘটেছে,কোথায় ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্নবাসন করা যায় ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দেবেন তারা।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ভারী বৃষ্টিতে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকা, মুসলিম পাড়া, শিমুলতলী এলাকা, সাপছড়ি, মগবান,বালুখালী এলাকায় এবং জুরাছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যূ হয়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ১২৭ জন। ১৮ হাজার ৫৫৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ সংখ্যা হয়। পাহাড় ধসের কারণে সারাদেশের সাথে সড়ক যোগযোগের এক সপ্তাহ বিচ্ছিন্ন থাকার পর হালকা যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ফের পাহাড়ধসে ঘটনা ঘটল।