‘সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে ডাক্তারও দেখায়নি’
প্রকাশ : ১১ জুন ২০১৭, ১৯:৩৫
২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ১১ মাস আটকে রেখেছিল। তারা আমাকে দোতলার নিচেও নামতে দিতো না। এমনকি অসুস্থ হলে আমাকে ডাক্তারও দেখায়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এরপরও কিন্তু আমি কখনও মনের জোর হারাইনি।’
১১ জুন (রবিবার) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কারামুক্ত দিবস উপলক্ষে নেতাকর্মীরা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছেলের বউয়ের অপারেশন এবং মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা থাকায় সেসময় আমি দেশের বাইরে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে বলা হয়েছিল দেশে আসলে মামলা দেবে, ওয়ারেন্ট ইস্যু করবে, আমাকে দেশে আসতে দেবে না। এই খেলাই তারা খেলতে চেয়েছিল। সবাই মামলার ভয়ে পালায়। আমি দেশে আসি মামলা মোকাবিলা করার জন্য। নির্দেশ ছিল কেউ যেন বিমানবন্দরে না যায় এবং তারা সংখ্যা বেঁধে দিয়েছিল। ১০/২০ জন, তার বেশি যেতে পারবে না। কিন্তু নেতা-কর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে কৌশলে বিমানবন্দরে হাজির হয়। এ ধরনের ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান আমল থেকে আওয়ামী লীগের ওপর নির্যাতন চলে আসছে। আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকারের কথা বলতো, বঞ্চনার কথা বলতো। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে উন্নত করতে কাজ শুরু করে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, আসলে একটা সরকার যদি ধারাবাহিকভাবে না চলে তাহলে উন্নয়নটা দেখা যায় না। আমরা ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। তার কারণ আমি দেশের স্বার্থ বিক্রি করতে চাইনি। বাংলাদেশের গ্যাস বিক্রি করতে হবে আর তার বিনিময়ে ক্ষমতায় থাকতে হবে। এই রাজনীতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে করে না। যারা মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তারাই এদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, বাংলা ভাই, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, অত্যাচার, নির্যাতন, মানুষ হত্যা করেছে। বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের হাত থেকে কেউ রেহায় পায়নি। আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে দেশের মানুষ উন্নয়ন পাচ্ছে। একটা সরকারের ধারাবাহিকতা যে একান্তভাবে প্রয়োজন সেটাও আজকে প্রমাণিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে।’