হিল উইমেন্স ফেডারেশনের মিছিলে হামলার অভিযোগ

প্রকাশ : ০৮ জুন ২০১৭, ১৭:৪৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

কল্পনা চাকমা অপহরণের বিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে খাগড়াছড়ি শহরে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে ইউপিডিএফ সমর্থিত হিল উইমেন্স ফেডারেশন। তবে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ-বিজিবির হামলা ও ধরপাকড়ের অভিযোগ করছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন।

৭ জুন (বুধবার) জেলা শহরের স্বনির্ভর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর মানিকছড়ি ও রামগড়ে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

'শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বিনা উস্কানিতে' পুলিশ ও বিজিবি হামলা চালিয়েছে দাবি করে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।

৭ জুন (বুধবার) দুপুরে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নীতিশোভা চাকমা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের এ নিন্দা ও প্রতিবাদের কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী হিল উইমেন্স ফেডারেশন কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে সকালে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।

মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল; কিন্তু এক পর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি বিনা উস্কানিতে মিছিলে বাধা দেয়, ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মিছিলে আগত শত শত নারীর উপর হামলে পড়ে এবং বর্বর ও পাশবিক উপায়ে নারীদের মারধর করতে থাকে। নারীরা দিগ্বিদিক পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে।

এক পর্যায়ে বিজিবি-পুলিশ স্বনির্ভর বাজারের পার্শ্ববর্তী খবংপয্যা গ্রামে ঢুকে বিভিন্ন বাড়ি ও স্বনির্ভর বাজারে দোকানপাটে তল্লাশি চালিয়ে গণ ধরপাকড় চালায়।

সংগঠনের কর্মী-সমর্থক প্রায় ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়।

অন্যদিকে পুলিশ দাবি করছে, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেতাকর্মীদের হামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নয় সদস্য আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে একজন হাবিলদারসহ তিনজন বিজিবি সদস্য ও একজন ডিএসবি সদস্যসহ ৬ পুলিশ সদস্য রয়েছে।

আহত বিজিবি সদস্যরা হলেন- হাবিলদার হাবিবুর রহমান (৫০), সৈনিক কামরুজ্জামান (২৬), সৈনিক মো: রুবেল (২৪)।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি তারেক মোহাম্মদ হান্নান বলেন, "বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বনির্ভর এলাকা থেকে ইউপিডিএফ সমর্থিত হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করেন। পূর্ব অনুমতি না থাকায় পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পুলিশের উপর হামলা চালান। এ সময় পুলিশ বিজিবির সহায়তা চাইলে বিজিবি সদস্যরা এসে যোগ দেন। তখন বিক্ষোভকারীরা বিজিবির উপরও হামলা অব্যাহত রাখেন। হামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নয় সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন হাবিলদারসহ তিনজন বিজিবি সদস্য এবং একজন ডিএসবি সদস্যসহ ছয় পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তাদের জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে"।

এ ঘটনায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ১৯ জনকে আটক করা হলেও পরে আটজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১১ জনকে থানায় নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি তারেক।

৩২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুজ্জামান চৌধুরী বলেন, "পুলিশের আহবানে বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থলে আসে। বিক্ষোভকারীরা বিনা কারণে বিজিবি সদস্যদের উপর হামলা চালায়"।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১১ জুন রাতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় পাহাড়ি নেত্রী কল্পনা চাকমাকে। সেনাসদস্যরা তাকে ধরে নিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত