ছাত্র জনতার মিছিলে পুলিশের হামলা (ভিডিও)
প্রকাশ : ২৬ মে ২০১৭, ১৪:২৬
অনেক আলোচনা সমালোচনা ও বিতর্কের পর ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ন্যায়বিচার এর প্রতীক হিসেবে গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে নির্মিত ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলা হয়। এই ঘটনাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকতার উপর আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে আজ ২৬ মে (শুক্রবার) সকাল ১১টায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ যাতে সংহতি জানিয়ে যোগ দেয় লেখক, প্রকাশক, সংস্কৃতি কর্মী ও সংগঠনসমূহ।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ এর পর সুপ্রিম কোর্টের উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ছাত্র জনতা। কিন্তু মিছিলটি দোয়েল চত্ত্বর পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ফটকের সামনে যাওয়ার আগেই সেখানে জলকামান ও টিয়ারশেল দিয়ে হামলা চালায় পুলিশ। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। টিয়ারশেল এর আঘাতে ও ধোঁয়ায় এসময় উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, সাংবাদিক সাকিল অরণ্য সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এছাড়া পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, উদীচীর আরিফ নূর সহ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
ভিডিও: বিবিসি বাংলা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা রনিয়া বলেন, "আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলাম এসময় পুলিশ অতর্কিতে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীসহ মিছিলে আসা আরো অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ছাত্র জনতার উপর এই ধরণের হামলা ফ্যাসিবাদী সরকারেরই পরিচয় বহন করে"।
এদিকে মুহুর্মুহু টিয়ারশেল নিক্ষেপ এর পর আন্দোলনকর্মীদের আগুন জ্বালিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে দেখা যায়। দুই দফা টিয়ারশেল নিক্ষেপের পর দোয়েল চত্ত্বর থেকে পুনরায় আন্দোলনকর্মীরা ভাস্কর্য পুনঃস্থাপনের স্লোগান দিয়ে মিছিল করে রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত যান।
ভাস্কর্য অপসারণ ও পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আগামী ২৭ মে (শনিবার) দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।
উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলাম সহ দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী ইতিপূর্বে ধর্মানুভূতির কথা তুলে এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার দাবী জানায় যার সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একাত্মতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা হয় সারা দেশের প্রগতিশীল মহলে। মৌলবাদী চক্রের কাছে একে নতজানু হওয়া বলে আখ্যা দেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার ঘটনাকেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর আঘাত বলেই দাবি করেছেন বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।