রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষিত হন আরও দুই তরুণী !
প্রকাশ : ২২ মে ২০১৭, ১৪:৩৩
বনানী থানায় দায়ের করা মামলার বাদী দুই শিক্ষার্থী ছাড়া আরও দুই তরুণী রেইন ট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থীর মতোই অন্য দুই তরুণীকেও একই সময়ে হোটেলে আনা হয়েছিল। সাত দিন রিমান্ডের চতুর্থ দিনে মামলার আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে হালিম তদন্তকারী কর্মকর্তাদের এই তথ্য জানিয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম ধর্ষণের শিকার অন্য দুই তরুণীর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে। পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার অন্য দুই তরুণীর পরিচয় ও অবস্থান জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে তরুণীদের কাছ থেকে তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। তদন্তের প্রয়োজনেই আরও তথ্য নেওয়ার জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে তাদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যদিও ধর্ষণের শিকার হয়ে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। মান-সম্মান ও প্রাণের ভয়ে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও তাদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে। এ কারণে তারা ভয় পেয়ে নিজেদের এক রকম লুকিয়ে রেখেছেন।’
ধর্ষণের শিকার ওই দুই তরুণীর পারিবারিক ও সামাজিক সম্মান যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সেদিক বিবেচনা করেই ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের নারী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মামলার দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে হালিমকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে যাকে প্রয়োজন, তাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
তদন্তে সংশ্লিষ্টরা জানান, নাঈম আশরাফের নিপীড়ন-নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য একজন শিক্ষার্থী সারা রাতই কান্নাকাটি করেছিলেন। ছেড়ে দেওয়ার জন্য নাঈমের পা ধরেছিলেন। একপর্যায়ে নিজেকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করে, হোটেলের লোকজনের সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু হোটেলের সবাই পরিচিত হওয়ায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করতে কেউ এগিয়ে যাননি। উপরন্তু নির্যাতনের কথা গোপন রাখার জন্য ওই তরুণীসহ অন্যদের ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে।
এদিকে মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ২১ মে (রবিবার) ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আদালতের কাছে দেওয়া বিল্লালের জবানবন্দিতে ধর্ষণের শিকার তরুণীদের ভিডিওধারণ ছাড়াও ভয়-ভীতি দেখানোর তথ্য উঠে এসেছে।
তবে নিজে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের কথা অস্বীকার করে আদালতকে জানিয়েছে, সে ইয়াবা সেবনের ভিডিও করেছিল।
জবানবন্দিতে বিল্লাল জানায়, গাড়ি চালানো অবস্থায় সে যা শুনেছে, তাতে তার কাছে মনে হয়েছে ধর্ষণের শিকার তরুণীদের সঙ্গে বিভিন্ন কৌশলে আপস করতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। কখনও ভয় দেখানো হয়েছে, কখনো টাকার প্রলোভন দিয়ে চুপ থাকতে বলা হয়েছে।