আবার বনানী, আবারো গণধর্ষণ, মামলা নিতে গড়িমসি!
প্রকাশ : ১৪ মে ২০১৭, ১৫:৫৮
বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার আলোচনার মধ্যেই আবারো এক গণধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে ঐ এলাকায়। বনানী থানায় যৌন হয়রানির অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার একদিনের মধ্যেই একদল বখাটের হাতে ধর্ষিত হয়েছেন এক নারী পোশাককর্মী।
অভিযুক্ত ধর্ষকরা হলো জুনায়েদ, আলী হোসেন, সোহাগ, নাতিব আলী।
জানা যায় এক্ষেত্রেও ধর্ষণ ঘটনার পর পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেন বনানী থানার কড়াইল বস্তির ধর্ষিত ওই পোশাককর্মী। এদিকে ওই নারীকে সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। অর্থ নিয়ে সমঝোতা না করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ধর্ষকরা। পুলিশও কোন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাই বিচারের আশায় এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
ওই নারী জানান, অনেক দিন ধরে এলাকার চিহ্নিত চার ক্যাডার তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে গত ২ মার্চ বনানী থানায় জিডি করেন। জিডি করার কারণে ওই দিন বিকালে ওই বখাটেরা তাকে মারধর করেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরদিন কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় ওই চার বখাটে। এ সময় চিৎকার করলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মধ্যেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরে তারা। এ পর্যন্ত বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন ঐ নারী।
তিনি জানান, রাতভর তাকে বনানীর একটি বাসায় আটকে রেখে ওই ক্যাডাররা নির্যাতন চালায়। এ সময় তারা বলতে থাকে, আমরা চাইলে সব করতে পারি। কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না।
ঐ নারী জানান, পরদিন সকালে অচেতন অবস্থায় রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয় তাকে। সেখান থেকে লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে। সেখানে আট দিন চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা করতে যান তিনি। কিন্তু পুলিশ মামলা না নিলে তিনি থানায় বসে কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় ওসি ধমক দিয়ে বলতে থাকেন, এটা কোনো কান্নাকাটির জায়গা নয়। এরপর ২৯ মার্চ ঢাকার সিএমএম আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে একটি নালিশি মামলা করেন তিনি। আদালত ১৮ এপ্রিল বনানী থানা পুলিশকে মামলা নিতে নির্দেশ দিলেও গড়িমসি করে প্রায় ১৪ দিন পর, ২ মে মামলা নেয় থানা পুলিশ। তবে পুলিশ এখনও অভিযুক্ত ধর্ষকদের ধরতে পারেনি।
নির্যাতিত ঐ নারী জানিয়েছেন অভিযুক্ত চার ধর্ষক অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুতের লাইনের কারবার করে। পুলিশকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের অর্থ দেয়। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে থানায় ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।
ঐ নারী বলেন, আমি ঘটনার বিচার চাই, আর কিছু চাই না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানার ওসি ফরমান আলী বলেন, ঘটনাটি ঠিক মনে নেই। ফাইল দেখে তারপর বলতে হবে।
ধর্ষিতার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান খান বলেন, আদালত নির্দেশ দেওয়ার এতদিন পর কেন মামলা নেওয়া হলো সেই প্রশ্নের উত্তর পুলিশই ভালো দিতে পারবে। আমি চাই ওই নারী ন্যায়বিচার পাক।