হালদারপাড়ার বাসিন্দারা এখন কি করবেন?
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৩:৪৭
বড়াল নদীর তীরের এক মহল্লার নাম চকসিংগা হালদারপাড়া। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি পৌর এলাকার এ মহল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জেলেদের বসবাস। গ্রামের ৫৭ জন বাসিন্দা একটি নৌকা ও জাল কিনে বড়াল নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
কিন্তু সংখ্যালঘুদের এই জাল-নৌকায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে জাল ও নৌকা পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে জীবন ও জীবিকা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন হালদারপাড়ার বাসিন্দারা। ২৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রাতের কোনো এক সময় নদীর ঘাটে বেঁধে রাখা নৌকায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে নৌকায় থাকা জালটিও পুড়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা হীরেন চন্দ্র হালদার জানান, গ্রামের সুধান্ন হালদার, হরিপদ হালদার, কালিপদ হালদার, জিতেন হালদার, বৃন্দাবন হালদার, নয়ন চন্দ্র হালদার, বিকাশ চন্দ্র হালদার, পরিমল চন্দ্র হালদারসহ তারা মোট ৫৭ জন টাকা তুলে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে একটি নৌকা তৈরী করেন। এছাড়া আড়াই লাখ টাকা দিয়ে কেনেন ৪০০ মিটার জাল।
এই জাল ও নৌকায় করেই তারা মাছ ধরে সংসার চালান। প্রতিদিনের মতো মাছ ধরা শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা নুরনগর খয়েরমিল এলাকার ঘাটে নৌকা বেঁধে রেখে চলে যান। রাতে দুর্বৃত্তরা নৌকাটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে জাল ও নৌকা পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। সকালে খবর পেয়ে সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর নারী-পুরুষরা বড়ালের পাড়ে ছুটে যান। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আড়ানী মৎস্যজীবি সময়বায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার হালদার বলেন, ‘এমনিতেই এলাকায় নদী-নালা নেই। সব শুকিয়ে গেছে। বড়াল নদীতে কিছুটা পানি আছে। এই নদীতে আমরা যৌথভাবে নৌকা ও জাল কিনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। রাতে কে বা কারা সেগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এখন সংসার চালাবো কিভাবে?’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মাহমুদ বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। মাছ ধরা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে নৌকা ও জালে আগুন দেওয়া হতে পারে। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি।
তবে এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ হয়নি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে জড়িতদের খুঁজে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’