শেষ হতে যাচ্ছে অপারেশন টুইলাইট, নিহত ৪ জঙ্গি
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০১৭, ২১:০০
সিলেটে দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানা অবশেষে ৩ দিনের অভিযানের পর সেনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফখরুল আহসান। একইসাথে ভেতরে ৪ জন জঙ্গির লাশ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
২৭ মার্চ, সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে অপারেশন টোয়াইলাইটের সর্বশেষ অবস্থা জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফখরুল আহসান। সোমবার সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়েই তিনি অভিযান প্রায় শেষ হওয়ার ইঙ্গিত দেন।
তিনি বলেন, ওই বাড়িতে তিন পুরুষ ও এক নারী জঙ্গির থাকার তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পেয়েছিলেন তারা। বর্তমানে তারা যে চারটি লাশ পেয়েছেন, তার মধ্যেও তিনজন পুরুষ ও একজন নারী।
পাঁচ তলা ওই ভবনের নিচ তলায় চারটি লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, “পুলিশের যে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম, মোটামুটি তথ্য ছিল যে এখানে চারজন জঙ্গি আছে। এটাও তথ্য ছিল যে তিনজন পুরুষ ও একজন মহিলা। যে ডেডবডি আমরা পেয়েছি তার মধ্যে তিনজন পুরুষ, একজন মহিলা।”
দুটি লাশ পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হলেও বাকি দুটি এখনও ওই বাড়ির ভেতরেই রয়েছে বলে জানান তিনি।
ব্রিগেডিয়ার ফখরুল বলেন, “বাকি দুটো ডেডবডির মধ্যে সুইসাইড ভেস্ট লাগানো আছে। যে অবস্থায় আছে, তাদেরকে ওইখান থেকে বের করাটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এই ডেডবডিগুলো কীভাবে বের করব, সেজন্য আমরা পরিকল্পনা করছি।”
চারজনের বাইরে আর কারও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে কি না-এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “চারজনের বিষয়ে আমরা জানতাম, চারটা ডেডবডি আমরা পেয়েছি। যতটুকু ধারণা হচ্ছে, এখানে জীবিত আর কেউ নাই। তবে কেউ হঠাৎ করে থেকেও যেতে পারে।”
নিহতদের মধ্যে শীর্ষ জঙ্গিদের কেউ রয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, তা পুলিশ ও র্যাব দেখে নিশ্চিত করতে পারবে।
তবে তিনি বলেন, “যে চারজন এখানে ছিল, তারা ওয়েল ট্রেইন্ড। তাদেরকে খুঁজে বের করে যে নিষ্ক্রিয় করা হল বা হত্যা করা হলো, তা সেনাবাহিনীর জন্য বিশাল বড় সফলতা।”
অভিযানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, “সার্বিক যে অবস্থাটা দেখলাম, যে একটা রুমের ভেতরে একটা ডেডবটি, তার পাশেই ছড়ানো ছিটানো আইইডি লাগানো রয়েছে। পুরো বিল্ডিংটায় যে পরিমাণ এক্সপ্লোসিভ আছে এগুলো যদি বিস্ফোরণ হয় তাহলে এই বিল্ডিংয়ের অংশ বিশেষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। যে অবস্থায় আছে, এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ এবং সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।”
তবে অভিযান এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার ফখরুল বলেন, “এই অপারেশনে আরও হয়ত কিছু সময় লাগতে পারে। আমাদের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বাকি কাজটুকু এগিয়ে নিয়ে যাব।”
তিনি বলেন, “দুঃসাহসিক অভিযানের জন্য আমরা সকলেই গর্বিত। আপনারও গর্ববোধ করতে পারেন। দেশবাসীর দোয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই খুব সুন্দর, সফলভাবে অভিযানটা চলেছে।”
অভিযান শেষে উস্তার আলীর মালিকানাধীন এই বাড়িটি সেনবাহিনী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা।
এর আগে ২৬ মার্চ, রবিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুইজন জঙ্গির নিহত হবার খবর জানিয়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফখরুল আহসান। সেই সাথে ওই বাড়িটির নানা স্থানে বিস্ফোরক স্থাপন করে জঙ্গিরা তা দুর্গম করে তুলেছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি।