‘পুনঃ বিয়েতে রাজি না হওয়ায়’ আরিফাকে খুন

প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০১৭, ২০:৫৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

পরিকল্পিতভাবে নয় বরং কথা কাটাকাটির জের ধরে সাবেক স্ত্রী আরিফাকে হত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন ফখরুল ইসলাম রবিন।

শুক্রবার মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রবিনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য তুলে ধরেন যুগ্ম কমিশনার বাতেন।

সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, "রবিন বলেছেন, ওইদিন আরিফার কিছু জিনিস ফেরত দেওয়ার কথা বলে তিনি সেন্ট্রাল রোডের বাসার সামনে হাজির হন। এসময় আরিফার সঙ্গে আবারও একসঙ্গে থাকতে চাইছিলেন রবিন। কিন্তু আরিফা রাজি হচ্ছিলেন না। বারবার আরিফাকে একসঙ্গে থাকার বিষয়ে চাপ দিলে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আরিফা বাসা থেকে ছুরি নিয়ে আসে। দুই জনের মধ্যে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আরিফার ছুরি গায়ে লাগে বলে রবিন দাবি করেছে"।

তবে আরিফার সাবেক স্বামীর এই দাবি কতটা সত্য তা যাচাই করা হবে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা বাতেন।

তিনি বলেন, “রবিন বলছে, সে পরিকল্পিতভাবে আরিফাকে হত্যা করেনি। আমরা তা তদন্ত করে দেখব।”

হত্যাকাণ্ডের আট দিন পর শুক্রবার ভোরে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করে।

এই ব্যাপারে বাতেন বলেন, আরিফা ছুরিকাহত হওয়ার পর রবিন ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। পরে এক বন্ধুর সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছিলেন। এসব সূত্র ধরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান সনাক্ত করার পর প্রথমে রবিনের খোঁজে জামালপুরে অভিযান চালানো হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় টাঙ্গাইল থেকে।

উল্লেখ্য, বাসার সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায়, গত ১৬ মার্চ সকাল ৮টা ৪৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে আরিফা ধূসর রংয়ের শর্ট জামা ও কালো ঢোলা পাজামা পরে বাম কানে মোবাইল দিয়ে কথা বলতে বলতে গেটের দিকে যান। এর তিন মিনিট পর ৮টা ৪৭ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের দিকে দুজনকে পকেট গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এসময় দেখা যায়, রবিন (প্যান্ট শার্ট ইন করা এবং জুতা পরিহিত) বাম হাত দিয়ে একটি লাল রংয়ের প্লাস্টিকের র‌্যাক বুকে চেপে এবং ডান হাতে একটি সাদা ছোট বস্তা নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। তার পেছনে আরিফা তার দুই হাতে দুটি হ্যান্ড ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করছেন।

এরপর আর কোনো সাড়াশব্দ নেই। সকাল ৮টা ৫১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের দিকে রবিনকে খালি হাতে দৌড় দিতে দেখা যায়। মূলগেট খোলা না থাকলেও পকেট গেট দিয়ে রবিনকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। রবিন পালানোর পর আশেপাশের লোকজন দৌড়ে গিয়ে দেখেন নীচ তলায় সিড়ির গোড়ায় দরজার সামনে আরিফাকে গলা কাটা অবস্থায় আবিষ্কার করেন। তখন একটি রিকশা ডেকে আরিফাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য সেন্ট্রাল রোডের আইডিয়াল কলেজ এলাকার বাসা থেকে বের হওয়ার সময় যমুনা ব্যাংকের কর্মকর্তা আরিফাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে বেলা ১২টার দিকে মারা যান আরিফা।

ওইদিন রাতেই আরিফার ভাই আব্দুল্লাহ আল আমিন বুলবুল কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে আসামি করা হয় আরিফার সাবেক স্বামী ফখরুল ইসলাম রবিনকে।

মামলা হওয়ার পর পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। রবিনই যে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, সে বিষয়ে ওই ভিডিও দেখে ‘অনেকটাই নিশ্চিত’ হওয়া গেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

0Shares
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত