দুধের শিশু থেকে মা বিচ্ছিন্ন: দুই পুলিশকে তলব

দুই মাকে দুধের শিশু থেকে বিচ্ছিন্ন করে ১৩ ঘন্টা থানায় আটকে রাখার ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানার ওসিসহ দুই পুলিশ সদস্যকে তলব করেছে হাই কোর্ট।

মঙ্গলবার একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদেশে আগামী ২৯ মার্চ আদালতে হাজির হয়ে সদর থানার ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহতাবকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে আদালত।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সোমবার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার। আদালতে এর পক্ষে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট শোভানা বানু ও নাজনীন আরা আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তাপস কুমার বিশ্বাস।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রানা কাওসার সাংবাদিকদের বলেন, "গত ১২ মার্চ মাদারীপুরের লক্ষ্মীগঞ্জে বিরোধপূর্ণ একটি জমির তদন্তে গিয়েছিলেন সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি ওই জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলা সংক্রান্ত বিষয় জানতে চান। পনির কিছু জানেন না বলার পর এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে থাপ্পড় দেন। এনিয়ে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালান মাহতাব"।

তিনি বলেন, "এসময় পনিরের স্ত্রী ও ভাবিকে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। তখন পনিরের স্ত্রীর তিন মাসের শিশু এবং ভাবির ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়”।

এরকম অমানবিকভাবে দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার ঘটনাকে কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে তা জানতে রুলও দিয়েছে আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ডিআইজি, মাদারীপুর পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া আগামী ৯ মের মধ্যে ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ প্রধানকে প্রতিবেদনও দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।