আরিফাকে হত্যা করে ফেসবুকে অন্যদের হুমকি রবিনের!
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০১৭, ০২:২৪
১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) নিজ বাসার সিঁড়ির সামনে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ব্যাংককর্মী সাবেক স্ত্রী আরিফুন্নেসা আরিফাকে হত্যা করার পরই থেমে যাচ্ছেন না ঘাতক ফখরুল ইসলাম রবিন। হত্যাকাণ্ডের পরও রবিন নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাসে লিখেন যেখানে আরো কয়েকজনকে নাম উল্লেখ করে হুমকি দেয়া হয়।
রবিন তার ফেসবুকে লিখেন, “বলেছিলাম বাঁচতে দে... জীবন নষ্ট করিস না... এখন বুঝো? অনিক, তানজিনা, শিল্পী, রিয়াদ, পলাশ, মাসুদ দেখা হবে মনে রাখিস।”
তবে স্ট্যাটাসটি কিছুক্ষণ পর রবিনের ওয়াল থেকে মুছে ফেলা হয়।
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরিফার এক বান্ধবী বলেন, "এখানে আরিফার দুই ভাই পলাশ ও মাসুদসহ তার খালাতো বোন শিল্পীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া তানজিনা, অনিক, রিয়াদের নাম লিখেছে সে। এরাও কেউ বান্ধবী, কেউ আত্মীয় বা বন্ধু"।
উগ্র মেজাজের রবিন এর মাধ্যমে তাদেরকেও হুমকি দিয়েছে বলে তিনি জানান।
ফেসবুক পোস্টটি মুছে ফেলা হলেও ভয়াবহ ঘাতক রবিনের এমন হুমকিতে তারা শঙ্কায় আছেন বলে জানান। ঘাতককে যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী- এই অনুরোধ করেন তিনি।
নিহতের ঐ বান্ধবী বলেন, "আরিফা ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী ছিল। আটবছরের প্রেমের সম্পর্কের পর চার বছর আগে রবিন-আরিফা বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পর বনিবনা না হওয়ায় মাস তিনেকের মধ্যে সে বাপের বাড়ি ফিরে যায়। এরপর সে ঢাকায় এসে ফের পড়ালেখা শুরু করে। সে ইডেন থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে। বছরখানেক আগে আরিফা যমুনা ব্যাংকে চাকরিতে যোগ দেয়। ধানমণ্ডির সেন্ট্রাল রোডে আইডিয়াল কলেজের পাশের এক বাসায় সাবলেট থাকা শুরু করে। এর মাঝে আরিফা আর রবিন একবার নিজেদের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করে। তবে তা সফল হয়নি"।
নিহতের বান্ধবীর স্বামী জানান, আরিফা আর রবিন দুজনেই জামালপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। আরিফা পড়তো জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আর রবিন জামালপুর জিলা স্কুলে। একইসঙ্গে তারা কোচিংও করতো। সে সূত্রে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু বিয়ের পর রবিনের আচার-আচরণ আরিফাকে হতাশ করে এবং সে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসে।
রবিনের উগ্রতায় ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে মাস তিনেক আগে তাকে তালাক দেয় আরিফা। এটা সে মেনে নিতে পারছিল না।
এদিকে রবিনের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক খোঁজ-খবরে জানা গেছে, জামালপুরের সদর উপজেলার বাসিন্দা এই ঘাতক মাদকাসক্ত এবং উগ্র মেজাজী। তার বাবা বেঁচে নাই। তবে মা আছেন। তার বড় ভাই লেলিন একটি ব্যাংকে চাকরি করেন।