আমরা ন্যায়বিচার পাইনি: সিফাতের মা
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৭:১৮
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সিফাত হত্যা মামলায় তার স্বামী মো. আসিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাকে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২৭ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় দেন। এর পর সিফাতের স্বজনরা সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মেয়ে সিফাত হত্যা মামলার রায় শুনে আদালতের ভেতর অঝোরে কাঁদলেন তার মা ফারজানা বানু। কাঁদতে কাঁদতে তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন- ‘আমি ন্যায়বিচার পাইনি। তারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না।’
রায় শুনে তার মা কাঁদতে কাঁদতে আরও বলেন, ‘আমার মেয়েকে যদি হত্যাই না করা হতো তাহলে তার শরীরে কীসের দাগ ছিল। আমি অপরাধীদের শাস্তি চাই। তারা একটা পরিষ্কার জিনিসকে অপরিষ্কার করে রায় দিয়েছেন। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’
ওয়াহিদা সিফাতের ভাবী গুলশান নেহা রিতাও হত্যা মামলায় রায়ে ন্যায়বিচার পাননি বলে মন্তব্য করেছেন।
সিফাতের ভাবী চিৎকার করে বলেন, ‘এ রায় পরিকল্পিত রায়। একটি হত্যাকে আত্মহত্যায় পরিণত করা হয়েছে। এ রায়ে আমরা ক্ষুব্ধ।’
অপরদিকে সিফাতের বাবা বলেন, ‘এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট না। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব। ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমরা।’
আলোচিত মামলার রায়ে আদালত বলেছেন, সিফাতকে হত্যা করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। যৌতুক চাওয়ার ঘটনাও প্রমাণিত হয়নি। তবে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার স্বামী মো. আসিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাগান এলাকায় অ্যাডভোকেট হোসেন মোহাম্মদ রমজানের বাড়িতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় গৃহবধূ ওয়াহিদা সিফাতের। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রথমে সিফাত আত্মহত্যা করেছেন বলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করলেও দ্বিতীয় দফার ময়নাতদন্তে হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হয়।
এ ঘটনায় ২ এপ্রিল মহানগরীর রাজপাড়া থানায় সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার সিফাতের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ ধারায় যৌতুকের দাবিতে হত্যা ও সহায়তা করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
২০১৬ সালের ২৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।