চেয়ারম্যানের নির্দেশে গৃহবধূকে আ.লীগ নেতার মারধর
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৬:৫৭
পটুয়াখালীর সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নে শালিশ বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত না মানায় তাসলিমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে প্রকাশ্যে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
শনিবার বিকেলে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও নির্যাতিত ওই নারী ওইদিন বিকেল থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় পুলিশ সুপারের কাছে বিচারের জন্য ধর্ণা দিলেও পুলিশ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রোববার রাতে নির্যাতনের শিকার তাসলিমা বেগম পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে সংবাদকর্মীদের জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে তার স্বামী মজিবর প্যাদা তার এবং তিন সন্তানদের ভরণ-পোষণ করেন না। এনিয়ে বেশ কয়েকবার স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করার চেষ্টা করেও তিনি ব্যার্থ হন। পরে গত বছরের ১৬ মে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে স্বামীকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি।
এরপরে তিনি একাধিকবার চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্যদের কাছে ধর্ণা দিলেও তাকে নানা অজুহাত দেখিয়ে হয়রানি করা হয়। এক পর্যায়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে শালিশ করা হবে এই মর্মে সময় ধার্য করেন চেয়ারম্যান। এর প্রেক্ষিতে বিকেল ৩টার দিকে তাসলিমা ও মামলা বিবাদী তার স্বামী মজিবর প্যাদা ছোটবিঘাই ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হন।
এসময় চেয়ারম্যানের স্নেহধন্য ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজ প্যাদা ও সাধারণ সম্পাদক আলাল মহরী তাসলিমাকে অলিখিত রোয়েদাদ নামায় স্বাক্ষর দিতে বলেন। এতে তাসলিমা অস্বীকৃতি জানালে চেয়ারম্যান আলতাব তাকে মারধরের নির্দেশ দেন।
পাশের একটি হোটেল থেকে লাঠি নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ নেতা আজিজ প্যাদা ও আলাল মহরী তাসলিমাকে বেদম প্রহার করেন।
এসময় স্থানীয় কয়েক যুবক মারধরের বিষয়টি তাদের মুঠোফোনে ধারণ করলে চেয়ারম্যানের নির্দেশে তা ছিনিয়ে নেয়া হয়।
অভিযুক্ত আলাল মহরী জানান, তাসলিমা স্থানীয় শালিশি মানতে চায়নি। আদালতে দায়ের করা মামলাটি উঠানোর জন্য তাসলিমা ও তার স্বামীকে রোয়েদাদ নামায় স্বাক্ষর দিতে বলা হয়েছে। তার স্বামী স্বাক্ষর দিলেও তাসলিমা স্বাক্ষর দিতে রাজি হয়নি, তাই তাকে স্থানীয় শালিশগণ একটু গালমন্দ করেছেন মাত্র।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন হাওলাদারের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি মারধরের বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং কিছু না বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।