স্কুলছাত্রী কনিকা হত্যা মামলায় মালেকের ফাঁসি

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:১৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্কুলছাত্রী কনিকা হত্যা মামলায় মাদকাসক্ত যুবক আব্দুল মালেকের (২৭) ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।

বুধবার বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন শিশু আদালতের বিচারক এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ জিয়াউর রহমান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর এসএএম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মহিপুর গ্রামের মৃত লক্ষণ ঘোষের মেয়ে কনিকা ঘোষকে (১৫) ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ফাঁসি ও তার তিন সহপাঠী একই ইউনয়নের বেহুলা গ্রামের মোঃ মকবুলের মেয়ে মরিয়ম খাতুন (১৫), অরুনবাড়ী গ্রামের মোঃ তাজেমুলের মেয়ে তানজিলা খাতুন (১৫) ও নসিপুর গ্রামের আব্দলু খালেকের মেয়ে তারিন আফরোজকে (১৬) মারাত্মকভাবে আহত করার দায়ে আসামিকে ৩২৬ ধারায় ১০ বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, ৩০৭ ধারায় ১০ বছর কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ৩২৪ ধারায় আসামিকে ৩ বছর কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। মৃত্যুদন্ড কার্যকর না হওযা পর্যন্ত এসব দন্ড চলতে থাকবে।

জনাকীর্ন আদালতে রায় ঘোষণাকালে নিহত কনিকার মা ও বাদী অঞ্জলি রানী ঘোষ, ছোট বোন নবম শ্রেণির ছাত্রী কাঞ্চনা রানী ঘোষ এবং একমাত্র আসামি আব্দুল মালেক উপস্থিত ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে ও সরকারি কৌঁসুলি জবদুল হক জানান, গত বছরের ২৭ মে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মহিপুর থেকে প্রাইভেট পড়ে কনিকা ও তার তিন সহপাঠী মরিয়ম খাতুন, তানজিমা তাহসিন ও তারিন আফরোজ বাড়ি ফিরছিল। পথে মাদকাসক্ত যুবক একই ইউনিয়নের দিয়াড় ধাইনগর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে আব্দুল মালেক হাঁসুয়া নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এতে চার স্কুলছাত্রী মারাত্মকভাবে আহত হয়। সদর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে কনিকা মারা যায়।

এ ঘটনায় ওই দিনই নিহত কনিকার মা অঞ্জলি রানী ঘোষ বাদি হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরের দিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।

তিনি আরো জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুর রশিদ। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবাবগঞ্জ সার্কেল) ওয়ারেছ আলী মিয়াকে তদন্তভার দেওয়া হয়। তিনি তদন্ত শেষে আসামি আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে গত বছরের ৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নিহত কনিকা রানী ও তার তিন সহপাঠী শিশু হওয়ায় এই মামলার বিচারকার্য গত বছরের ২৩ নভেম্বর থেকে শিশু আদালতে শুরু হয়। এই মামলায় আদালতে ২১ জন স্বাক্ষী উপস্থাপন করা হয়। এ বছরের ২৬ জানুয়ারি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিজ্ঞ আদালত বুধবার রায় ঘোষণা করেন। মাত্র ১৫ কর্মদিবসে মামলার কর্মকাণ্ড শেষ হয়।

মামলার রায়ে বাদি কনিকার মা অঞ্জলি রানী ঘোষ, সরকারি কৌসুলী জবদুল হক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। রায় শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে কনিকার মা বলেন, তিনি যত দ্রুত সম্ভব এই রায় কার্যকরের আশা করছেন। এতে তাঁর মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। আসামি পক্ষ কোন আইনজীবি নিযুক্ত না করায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে ছিলেন আ্যাড. সোহরাব আলী।

0Shares
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত