‘অনবরত নারীর ওপর নির্যাতন হচ্ছে’
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৩:৫৯
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন ‘এদেশে বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর সুযোগ খুব সীমিত। আবার নারী যখন বিচার চান, পান না। কিছু কিছু জায়গায় আমরা হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে আছি যেমন তনু, নিতু, রুনি হত্যার ক্ষেত্রে। অনবরত নারীর ওপর নির্যাতন হয়ে যাচ্ছে। আমরা বিব্রত বোধ করি, কিন্তু এর বিচার হয় না।’
২২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সিডও (নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপে সনদ) বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে যৌথভাবে এর আয়োজন করে বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং ইউএন উইমেন।
সুলতানা কামাল বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অধিকার পেলেও নারীর সম-অধিকারের বিষয়টি সমাজে এখনো অগ্রহণযোগ্য। এ ছাড়া বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ ধারা বিদ্যমান আইনগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পাশাপাশি সিডও সনদসহ নারীর সম-অধিকার বাস্তবায়নে সরকার প্রতিশ্রুতিশীল কি না, নীতিনির্ধারকের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু আছে—এ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
ইউএন উইমেনের এদেশীয় প্রতিনিধি ক্রিস্টিন হান্টার বলেন, সিডও সনদ হচ্ছে নারীর প্রতি বৈষম্য রোধের একটি বড় হাতিয়ার। তবে সহিংসতার শিকার নারীর বিচারপ্রক্রিয়ায় অভিগম্যতা বাড়ানো না গেলে সেটার বাস্তবায়ন কঠিন। আর নারী ন্যায়বিচারের অধিকার না পেলে অন্য অধিকারগুলোও নিশ্চিত করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নারীর প্রতি সব বৈষম্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে সরকার সিডও সনদে স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এর বাস্তবিক প্রয়োগ নেই। সনদে মোট ৩৪টি সাধারণ সুপারিশ রয়েছে। সাধারণ সুপারিশ ১৯ এবং ৩৩-এ নারী ও মেয়েশিশুর ওপর সহিংসতা কমানো এবং সহিংসতার শিকার হলে বিচার পাওয়ার কথা বলা আছে। সুস্পষ্ট ধারণা থাকলে এই সুপারিশ দুটি আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা কমানো যাবে; বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর সুযোগ বাড়বে।
এতে বক্তারা বলেন, দেশে নারীর ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা। সহিংসতার শিকার কোনো নারী বিচার চাইতে গেলে তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা হতে হয়। বিচারব্যবস্থায় নারী-পুরুষ বৈষম্য প্রকট; বিচারব্যবস্থাও নারীবান্ধব নয়। পাশাপাশি কোন ঘটনার জন্য কোন আইনে মামলা হবে, তা-ও বেশির ভাগ মানুষ জানে না। বিভিন্ন আইনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবও বিচার প্রাপ্তিতে একটি বাধা।
ব্লাস্টের সাম্মানিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেনের সঞ্চালনায় এতে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।