রোহিঙ্গাদের নির্যাতন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:০৩
১৭৮৪ সালে বার্মা স্বাধীন আরাকান সাম্রাজ্য দখল নেওয়ার পর থেকে সেখানকার অধিবাসী রোহিঙ্গা মুসলমান ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইনদের (মগ) ওপর নির্মম নিপীড়নের সূত্রপাত। এরপর চলে নির্বিচারে গণহত্যা ও অমানবিক নির্যাতন। এছাড়া সেখানকার রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক ধর্মাচার, জীবনযাপন, শিক্ষা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিতসহ কিছুদিন পর পর সাম্প্রদায়িক নানা ইস্যু সৃষ্টি করে। এই ধারা অব্যাহত রেখে দেশটিতে সম্প্রতি সময় বেশ উত্তেজনা বিরাজ করেছে। বাংলাদেশে এই ঘটনার প্রতিবাদে ‘রোহিঙ্গা অধিকার ও সংহতি মঞ্চ’ এক মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বেলা ১১ টার সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে মায়ানমারের আরাকানে চলমান রোহিঙ্গা গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়ন বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের জাতিগত অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শরণার্থী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে তাদের মাতৃভূমি আরাকানে প্রত্যাবাসনের সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে এদেশে সাম্প্রদায়িক জঙ্গি ও কায়েমী রাজনৈতিক গোষ্ঠী ও সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন রুখে দাঁড়ানোর দাবি তুলেন।
সমাবেশে বক্তারা রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ আহ্বান জানান। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কূটনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদি গোষ্ঠীসমূহ বিভিন্ন উষ্কানিমূলক বিষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। তাই সকল সাম্প্রদায়িক উষ্কানি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সকল স্তরের মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ও ‘রোহিঙ্গা অধিকার ও সংহেতি মঞ্চ’ এর সমন্বয়কারি রহমান মুফিজের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এর কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতা শরীফুজ্জামান শরীফ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতা মঞ্জুর মঈন।
এছাড়া সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ব্যারিস্টার আবুল আলা, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক আকরামুল হক, কবি মনির ইউসুফ, উদীচীর নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতাকর্মীরা।