প্রধানমন্ত্রীকে রামপাল ইস্যুতে যুক্তিতর্ক ও গণভোটের চ্যালেঞ্জ
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০১৬, ১৮:৪৯
খুলনার রামপালে সুন্দরবনের প্রায় কাছেই কয়লাবিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন চুক্তি বাতিল করে দেশের অন্যত্র স্থাপনের আহ্বান জানান তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে দাবি করে জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাভ-ক্ষতির বিষয়ে সরাসরি যুক্তিতর্কে বসার ও গণভোটের জন্য আহ্বান জানান।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় কমিটির মহাসমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তা নেতৃবৃন্দরা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘যুক্তিতর্কের দিন শেষ। মিথ্যা যুক্তি দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কেউ মানবে না। যদি তর্কের আরো বেশি ইচ্ছা থাকে তবে এই শহীদ মিনারেই একদিন আসুন। আপনার সাথে সামনাসামনি বসে আমি যুক্ততর্ক করবো। এরপর জনগণ বিচার করবে কে কতোটা সঠিক।’
কমরেড সেলিম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, ‘তিনি বলছেন কয়লা দিয়ে নাকি পানির ময়লা দূর করা যাবে। তাহলে আপনি প্রতিটা জেলায় ওয়াসাকে সরিয়ে সেখানে কয়লা দিয়ে পরিশুদ্ধ পানি সাপ্লাই দেওয়া ব্যবস্থা করুন।’
তিনি আরোও বলেন, ‘উন্নয়নের নামে এমন পরিবেশবিরোধী ও দেশবিরোধী চক্রান্ত রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি বাতিল করতে হবে। এর জন্য আমাদের সংগ্রাম জারি থাকবে। দেশে বিভিন্ন স্থান রয়েছে এমন উন্নয়নের। প্রয়োজনে আপনি আপনার গণভবনের পাশে কিংবা কোনো ক্যান্টনমেন্টের পাশে এমন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করুন। প্রকল্প স্থানান্ত করা যায়, কিন্তু সুন্দরবন স্থানান্তর কিংবা নতুন করে সৃষ্টি একেবারেই সম্ভব নয়। তাই এমন পরিবেশের ক্ষতিকারী প্রকল্পের চুক্তি ভাঙুন।’
জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ক্ষতি নিয়ে এখনোও যদি কোনো সংশয় থেকে থাকে তবে সারাদেশে গণভোটের ব্যবস্থা করুন। দেখবেন কতো মানুষ সুন্দরবন ধ্বংসকারী এই রামপাল প্রকল্প চুক্তির বিপক্ষে রয়েছেন।’
সুন্দরবন রক্ষায় ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন ও রামপাল প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে ২৪ নভেম্বর সারা দেশের প্রায় সকল জেলা থেকে জাতীয় কমিটিসহ বিভিন্ন বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে রাজধানীতে আসা শুরু করেন। এরপর সকাল ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন ঢাকা ও সারা দেশ থেকে আসা বিভিন্ন বামপন্থি দলের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৫টায় ৩ দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করে শহীদ মিনার থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত এক বিশাল মিছিলের মধ্য দিয়ে শেষ হয় জাতীয় কমিটি’র ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচির শেষ হয়।