ধর্ষণ চেষ্টায় ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:২৫
ধর্ষণচেষ্টার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে জনগণের হাতে গণপিটুনি খেয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক তারিক হাসান তারেক। শুক্রবার গভীর রাতে কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মদ্যপ অবস্থায় শুক্রবার রাতে কলেজ চত্বরে বসবাসরত এক পরিচারিকার ঘরে ঢুকে অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ছাত্রলীগ নেতা তারেক। এ সময় ওই পরিচারিকার ছেলে বিষয়টি বুঝতে পেরে তারেককে হাতেনাতে ধরে ফেলে। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে তারেককে গণপিটুনি দেয় এবং তার চুল কেটে দিয়ে অণ্ডকোষ ইট দিয়ে ছেঁচে দেয়। পরে ছাত্রলীগের আরও কিছু নেতা গিয়ে তারেককে উদ্ধার করে দ্রুত ওই এলাকা ত্যাগ করে। গুরুতর আহত তারেককে অজ্ঞাতস্থানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় ওই রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা। মামলার বিবরণে এ তথ্যের সত্যতা মিলেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তোজাম্মেল হক ধর্ষণের ঘটনায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলা নম্বর-২৭। তিনি আরও জানান, মামলায় ধর্ষক তারেকের সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, হাতেনাতে ধরা পড়ার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কেউ কেউ তারেকের নগ্ন ছবি তুলে তা ফেসবুকে আপলোড করায় সেই ছবি এবং ঘটনার বিবরণ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে পৌঁছে যায়। বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবহিত হয়ে শনিবার রাতে কলেজ শাখা কমিটি বিলুপ্তসহ ধর্ষক তারিক হাসান তারেককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে। এ ঘটনায় কলেজ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।
শনিবার রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি মো: সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস.এম.জাকির হোসাইন এক যুক্ত স্বাক্ষরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নির্দেশ দেন।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক জাকির হুসাইন জ্যাকি ও সাবেক ছাত্রলীগ জেলা কমিটির সভাপতি শরিফ হোসেন দুদু কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দাবি করেছেন, এর আগেও আরও কয়েকজন কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারিক হাসান তারেকের বিরুদ্ধে। আরেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার যোগসাজসে সরকারি কলেজ পড়ুয়া অনেক ছাত্রীকে প্রলুব্ধ করে শহরের একটি আবাসিক হোটেলে জোর করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করতো তারিক। কিন্তু ওই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতার ভাইয়ের ছেলে হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পেতো না ওই ছাত্রীরা। ফলে লোকলজ্জার ভয়ে বাধ্য হয়ে তারা সরকারি কলেজে পড়া ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে যায়। এ খবর মুখে মুখে প্রচারিত থাকায় অনেক অভিভাবক তাদের মেয়েদের সরকারি কলেজে ভর্তি করাতে উৎসাহী হন না।