তনু হত্যা
প্রথম ময়নাতদন্তকারীর বক্তব্য তনুর বাবা মায়ের প্রত্যাখ্যান
প্রকাশ : ০২ জুন ২০১৬, ২০:২৮
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক শারমিন সুলতানার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন তনুর বাবা মা।
বৃহস্পতিবার (০২ জুন) সকালে তনুর মা আনোয়ারা বেগম সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।
তিনি আরোও বলেন, তনুর লাশের প্রথম সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। এতে তনুর মাথার পেছনের জখম ও নাকের আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়নি। শরীরের বিভিন্ন অংশে ও পায়ের আঘাতের কথাও লেখা হয়নি। একই কথা বলেন তনুর বাবা ইয়ার হোসেনও।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি নিজের চোখে দেখেছি, তনুর মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন। নাক চ্যাপ্টা হয়ে গেছে। কানের নিচে দাগ রয়েছে। এখন শারমিন সুলতানা যা বলছেন, সব মিথ্যা তথ্য। দ্বিতীয়বার কবর থেকে লাশ উঠানোর সময়ও মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন সংশ্লিষ্টরা। আমি এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি।’
উল্লেখ্য প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানা উকিল নোটিশের জবাবে বলেছেন, ‘সোহাগী জাহান তনুর (১৯) লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম সুরতহাল প্রস্তুত করেন। এরপর পুলিশ কনস্টেবল মোবারক হোসেনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে তনুর লাশ পাঠানো হয়। বাংলাদেশের সব মেডিকেল কলেজে যে নিয়মে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়, সেই নিয়মেই যথাযথভাবে তনুর লাশের ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে কুমিল্লা সিএমএইচ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিত্সক লে. কর্নেল সেলিনা বেগম, তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম এবং ভাই আনোয়ার হোসেনসহ ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যসহ সুরতহাল প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়। ওই সুরতহাল প্রতিবেদনে তনুর লাশে যে জখমের কথা উল্লেখ আছে, তার সঙ্গে মলদ্বার এবং যৌনাঙ্গ স্বাভাবিক ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে। চিকিত্সক হিসেবে আমি ভালোভাবে সুরতহাল প্রতিবেদন ও তনুর লাশের জখমগুলো মিলিয়ে দেখি এবং আমি আমার বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞানানুসারে সব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিই। এতে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়নি এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। প্রথম ময়নাতদন্তের সময় আমার কাছে ডিএনএ পরীক্ষার কোনো চাহিদাপত্র দেওয়া হয়নি। সাধারণত সুরতহালে পুলিশ কর্তৃক চাহিদাপত্র দেওয়া না হলে ডিএনএ অ্যানালাইসিসের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয় না। তনুর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কোনো মিথ্যা তথ্য প্রদান করিনি। সুতরাং প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে আমার সম্পর্কে যে তথ্য প্রদান করা হয়েছে, তা সঠিক নয়।’