আ’লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের অনুষ্ঠানসূচি

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০১৬, ০০:৪৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

উত্তাল সমুদ্রে ভাসমান নৌকার ছইয়ের নিচে বিশাল আকৃতির মঞ্চ। মঞ্চের উচ্চতা মাটি থেকে ২৫ ফুট হলেও নৌকার গলুই দুটো নাগালের বাইরে দুর্বার ভঙ্গিতে দণ্ডায়মান। মূল মঞ্চের প্রথম সারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের আসন। দ্বিতীয় সারিতে ৫৮ জনের। মঞ্চের পেছনে ৩৫ ফুট উচ্চতার এলইডি পর্দা।

মঞ্চের সামনে স্বচ্ছ কাচের খুঁটিবিহীন একটি গ্যালারি। যার আকার ২৩০ ফুট বাই ১২৫ ফুট। সেখানে ৭ হাজার অতিথির আসন থাকবে। ৪০ হাজার মানুষের ধারণ মতাসম্পন্ন প্যান্ডেলের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। প্যান্ডেলের নিচে প্রত্যেক জেলার পৃথক পৃথক স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

উপমহাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সম্মেলন বলে কথা! তাই আয়োজনটা একটু বেশিই। আগামীকালের সম্মেলনে থাকছে জমকালো আয়োজন। চোখ ধাঁধানোও লেজার শো, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, বালুশিল্প, তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা, ৫০ হাজার মানুষের ২ দিনব্যাপী খাবার তো থাকছেই। আর ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা শহরগুলোতে ১০ দিন আগে থেকেই চলছে আলোকসজ্জা।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে তাই এবারের সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ হয়েছে- ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার।’

রাত পেরোলেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলন সফল করতে সব প্রস্তুতিই শেষ পর্যায়ে। দুই দিনের এ সম্মেলন চার অধিবেশনে সাজানো হয়েছে।

শনিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সম্মেলন কেন্দ্রে আসবেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সভাপতি অনুষ্ঠানস্থলে আসার পরেই সব ধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে শুরু হবে সম্মেলনের মূল কার্যক্রম। দলের থিম সংয়ের সঙ্গে এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। 

গত সম্মেলনের পর থেকে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া জাতীয় আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সব আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত দলীয় নেতা ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করবেন আব্দুল মান্নান খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম।

এরপর পর্যায়ক্রমে বক্তব্য দেবেন সম্মেলনে আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিরা। পরে দলীয় সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা বক্তব্যের মাধ্যমে এই পর্বের সমাপ্তি হবে।

সভাপতির বক্তব্যের পর বিগত সম্মেলন থেকে এ পর্যন্ত দলের বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর করা প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এই প্রতিবেদনকে সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট বলা হয়ে থাকে। সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপনের পর মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে আমন্ত্রিত অতিথিসহ সম্মেলন স্থলে উপস্থিতদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দলের নেতারা বক্তব্য দেবেন। জেলার নেতাদের বক্তব্যের শেষে সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাস, এতিহ্য ও আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। 

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন রবিবার সকাল ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শুধু কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে চলমান কমিটি বিলুপ্ত করা হবে। সম্মেলনের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন ৬ হাজার ৭৫০ জন কাউন্সিলরের ভোটে দলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। 

নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-ড. মসিউর রহমান ও রাশেদ উল আলম। এরই মধ্যে কাউন্সিলরদের মধ্যাহ্নভোজের বিরতি দেয়া হবে। খাবারের পর বিকেলে আগামী তিন বছরের জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। 

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা হওয়ার পর নির্বাচিত সভাপতি একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দেবেন। এর মাধ্যমেই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত