হোসাইনী দালান হামলা, ১০ জঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:৪৪
পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে আশুরার সমাবেশে বোমা হামলার এক বছর এর বেশি সময় পর অবশেষে মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার জেএমবির ১০ সদস্যকে আসামি করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।
আসামিরা হলেন- ওমর ফারুক মানিক (২৮), হাফেজ আহসান উল্লাহ মাসুদ (২৯), শাহজালাল মিয়া (৩৮), চান মিয়া (৩২), কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক (২৮), মাসুদ রানা মাসুদ ওরফে সুমন (২৪), আবু সাঈদ রাসেল ওরফে সোলায়মান ওরফে সালমান ওরফে সায়মন (২২), মো. আরমান ওরফে মনির (২৭), জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মুসায়াব (২২), রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব ওরফে সুমন (২২)।
এদের মধ্যে নেত্রকোনার মানিক, মাসুদ, গাজীপুরের শাহজালাল, গাইবান্ধার চান মিয়া গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্ত রয়েছেন। আরমান, জাহিদ ও কবির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালত সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক মোহা. শফিউদ্দিন মঙ্গলবার অভিযোগপত্রটি জমা দেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত আলবানি ওরফে শাহাদত ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা, আবদুল্লাহ বাকি ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে নোমান, সাঈদ ওরফে হিরণ ওরফে কামাল ছিলেন এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী।
হামলার আগে ১০ অক্টোবর তারা বৈঠক করে শিয়া মুসলিমদের ওই সমাবেশে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছিলেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন।
গত বছরজুড়ে জঙ্গি হামলার মধ্যে ২৩ অক্টোবর রাতে আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় হোসাইনী দালানের ইমামবাড়ায় বোমা হামলা হয়। এতে দুজন নিহত হন।
ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। প্রথমে মামলাটি চকবাজার থানা তদন্ত করলেও পরে তদন্তের দায়িত্ব নেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় অভিযোগপত্র দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হওয়ায় তা পেতে দেরি হওয়ায় বিচার শুরু হয়নি এক বছরেও।
তিন মাস আগে গত ২১ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি আবেদনপত্রে লিখেছিলেন, অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
তার আড়াই মাস পর তদন্ত কর্মকর্তা শফিউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলেন।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় এ অভিযোগপত্রটি আড়াই মাস পড়ে ছিল।
এতে বলা হয়, বোমা হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল জাহিদ হাসান, আরমান ও কবির হোসেন। হামলার পর উঠার জন্য কামরাঙ্গীরচরে একটি বাসাও ভাড়া নিয়েছিল তারা।
জাহিদ ও কবির পরিস্থিতির উপর নজর রাখার সময় আরমান সেদিন পরপর পাঁচটি বোমা ছুঁড়েছিল বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, মাসুদ রানারও হামলায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘটনার আগের দিন গাবতলীতে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে বাধা পেয়ে এএসআই ইব্রাহীম মোল্লাকে হত্যা পর সে ধরা পড়ে যায়।