কন্যা জন্ম দেওয়ায় গৃহবধূর শরীর ঝলসে দিলো শাশুড়ি
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০১৬, ১৭:৫৬
কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় গরম পানি ছুড়ে চামেলী খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূর শরীর ঝলসে দিয়েছে শাশুড়ি জায়দা খাতুন।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার বিলকাজুলী গ্রামে ৯ অক্টোবর (রোববার) সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে স্বজনরা রোববার সকাল ১০টার দিকে আহত চামেলীকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চামেলী উপজেলার বিলকাজুলী গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে।
আহত চামেলীর স্বজনরা জানান, প্রায় ১১ বছর আগে বিলকাজুলী গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে আবু হোসেন বিটুর সঙ্গে বিয়ে হয় চামেলীর। বিয়ের পর সুখেই ছিল চামেলী।
প্রায় ৪ বছর আগে চামেলীর একটি মেয়ে হয়। মেয়ের হওয়ায় শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামী খুশি হতে পারেননি। কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় অপয়া অপবাদ দিয়ে চামেলীকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন তারা।
এ বিষয় নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও সমঝোতা হয়নি। চামেলীর ওপর তাদের নির্যাতন চলতেই থাকে। তারা চামেলীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার নানা কৌশল অবলম্বন করেন। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি।
রোববার সকালে আবু হোসেন বিটু বাড়ির বাইরে ছিলেন। সে সময় বউ-শাশুড়ি একসঙ্গে রান্না করছিলেন। একপর্যায়ে মেয়ের জন্ম দেওয়ার কথা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে শাশুড়ি জায়দা খাতুন ক্ষিপ্ত হয়ে চুলায় ডিম সিদ্ধ করতে থাকা গরম পানি চামেলীর শরীরে ছুঁড়ে দেন। গরম পানিতে চামেলীর শরীরের ডান পাশে কোমর থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঝলসে যায়। খবর পেয়ে তারা এসে চামেলীকে উদ্ধার করেন।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইকবাল হোসেন সনি জানান, গরম পানিতে চমেলীর শরীরের অনেকটা ঝলসে যাওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ধুনট সদরের চেয়ারম্যান লাল মিয়া এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, এ ধরনের ঘটনার কথা শুনেছি। কিন্তু কেউ লিখিত ভাবে অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।