কুমিল্লা কারাগারে বিশেষ দায়িত্ব ও সুবিধা কোনোটিই পাবেন না পাপিয়া
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৩, ১৫:৫৬
যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলা কমিটির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়াকে গাজীপুরের কাশিমপুর থেকে কুমিল্লা কারাগারে আনা হয়েছে। গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতি রুনা লায়লাকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগে তাকে স্থানান্তর করা হয়।
সোমবার (৩ জুলাই) বিকাল ৫টায় গাজীপুরের কাশিমপুর থেকে একটি প্রিজনভ্যানে করে তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে উদ্দেশে পাঠানো হয়। সেখানে পাপিয়াকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
কারাগারের একটি সূত্র বলছে, রাত সাড়ে ৯টায় কারাগারে আনার পরই তাকে নারী ওয়ার্ডে রাখা হয়। কারাগারে দুটি নারী ওয়ার্ড। ছোটটিতে গর্ভবতী ও সন্তানসহ বন্দিদের রাখা হয়। বড়টিতে রাখা হয় অন্যদের। সেখানে ২০-৫০ জন বন্দি থাকতে পারেন। এই ওয়ার্ডেই পাপিয়া রাত পার করেছেন। অন্য কয়েদিদের সঙ্গেই তাকে রাখা হয়েছে। অন্য সবার মতো তার খাবার, ঘুমানোসহ সব ব্যবস্থা ছিল একই নিয়মে।
কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার ওবায়দুর রহমান জানান, হাজতি নির্যাতনের অভিযোগে কাশিমপুর কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা ও মেট্রন হাবিলদার ফাতেমাকে শোকজ করা হয়েছে।
কুমিল্লা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লা আল মামুন জানান, যেহেতু তার আচরণে সমস্যা ছিল, বন্দিদের মারধর করতো, তাই এখানে যেন ওই ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটাতে পারে, সে জন্য পাপিয়ার প্রতি বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। গাজীপুরে যেমন তাকে রাইটার হিসেবে একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, কুমিল্লায় তাকে কোনো বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
আব্দুল্লা আল মামুন আরও জানান, কুমিল্লায় নারীদের জন্য বিশেষায়িত কোনো কারাগার নেই, শুধু ছোট ছোট দুটো কক্ষ আছে। যার প্রত্যেকটিতে ৪০-৫০ জন করে আসামি থাকেন। পাপিয়াকে সেখানে সাধারণ আসামিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে। তার জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থাও নেই।
উল্লেখ্য, ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেলবিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে ‘রাইটার’ হিসেবে কাশিমপুর কারাগারে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে, নথি চুরির একটি মামলায় শিক্ষানবিস আইনজীবী রুনা লায়লাকে ১৬ জুন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা হয়। কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে নেওয়ার পর দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন তার কাছে সাত হাজার ৪০০ টাকা পান। ওই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পাপিয়া ও তার সহযোগী কয়েদিরা গত ১৯ জুন রুনার ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
একপর্যায়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রুনাকে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। এ নিয়ে কারাগারের ভেতরে কেস টেবিল বা সালিশ বসে। সেখানে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বন্দি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে পাপিয়ার ভয়ে সাধারণ কয়েদিরা রুনার ওপর অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদও করতে পারেনি।