নির্দেশনা মানা সাপেক্ষে বাড়লো সাধারণ ছুটি
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২০, ১৭:০৮
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে চলমান সাধারণ ছুটি আরও ১৪ দিন বাড়ল। তবে রয়েছে বিভিন্ন নির্দেশনা যা মানা সাপেক্ষে আগামী ১৭ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
১৪ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সপ্তম দফায় ছুটি বাড়িয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। এই ছুটির মধ্যে শবে কদর ও ঈদের ছুটিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ছুটি বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কারোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১৬ মে’র পর শর্তসাপেক্ষে বিদ্যমান ছুটি বৃদ্ধি করাসহ জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ/সীমিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ১৭ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। সাধারণ ছুটির সঙ্গে ২১ মে’র শবে কদরের ছুটি, ২২, ২৩ ও ২৯ ও ৩০ মে’র সাপ্তাহিক ছুটি এবং ২৪, ২৫ ও ২৬ মে’র ঈদের ছুটি যুক্ত হবে।
১৭ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ছুটিকালীন জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা/সীমিত থাকবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
ছুটিতে যেসব নির্দেশনা মেনে চলতে হবেঃ
* সাধারণ ছুটি এবং চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় এবং এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। জেলা প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই নিয়ন্ত্রণ সতর্কভাবে বাস্তবায়ন করবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় ক্রয়-বিক্রয়, ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে আসা যাবে না।
* এই ছুটি চলাচল/নিষেধাজ্ঞাকালীন জনগণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারিকৃত নির্দেশমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
* রমজান এবং ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দোকানপাটে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। বড় বড় শপিংমলের প্রবেশ মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আগত যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। দোকানপাট এবং শপিংমলগুলো আবশ্যিকভাবে বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
* সাধারণ ছুটি/নিষেধাজ্ঞাকালীন জরুরি পরিষেবা যেমন-বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ-সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন।
* সড়ক ও নৌপথে সব ধরনের পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন (ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল প্রভৃতি) চলাচল অব্যাহত থাকবে।
* কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না।
* চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মী এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম (ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া) এবং কেবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়োজিত কর্মীরা সাধারণ ছুটি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।
* ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রফতানিমুখী শিল্পসহ সব কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত ‘বিভিন্ন শিল্প কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে নির্দেশনা’ নিশ্চিত করতে হবে।
* পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সময়ে শিল্প-কারখানা ও কৃষি উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করা হবে।
* সাধারণ ছুটিকালীন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না।
* রমজান, ঈদ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা বিবেচনায় ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
* সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসসমূহ প্রয়োজনানুসারে খোলা রাখবে। সেই সঙ্গে তারা তাদের অধিক্ষেত্রের কার্যাবলি পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং আওতাধীন অফিসসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
* সাধারণ ছুটি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। ওই সময়ের সড়কপথে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল এবং অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে এবং মহাসড়কে মালবাহী/জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন ছাড়া অন্যান্য যানবাহন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
* ঈদুল ফিতরের নামাজের ক্ষেত্রেও বর্তমানে বিদ্যমান বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে। উন্মুক্ত স্থানে বড় জমায়েত পরিহার করতে হবে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।