সিদ্ধিরগঞ্জে ‘২০ ছাত্রীকে ধর্ষণ’: শিক্ষকের স্বীকারোক্তি
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০১৯, ১২:২৫
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অন্তত ২০ জন ছাত্রীকে ধর্ষণের দায় স্বীকার আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন অক্সফোর্ড হাই স্কুলের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম।
০২ জুলাই (মঙ্গলবার) নারায়ণগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আহমেদ হুমায়ূন কবীরের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। আদালত পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, আদালতে শিক্ষক আরিফুল ইসলাম একাধিক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে, কাউকে পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, আবার ফেল করা শিক্ষার্থীকে বাসায় ডেকে এনে অন্যের খাতা দেখে লেখার সুযোগ দিয়ে ধর্ষণ করেছেন বলে আদালতে জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন।
এর আগে তাকে আদালতে উপস্থিত করে স্কুল ছাত্রীদের ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় শিক্ষক আরিফুল ইসলাম তিনদিন করে ছয়দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডের তৃয়ীয় দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবিন্দ দিতে রাজি হওয়ায় মঙ্গলবার তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়।
উল্লেখ্য, ব্ল্যাকমেইল করে ২০ ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সেই শিক্ষক আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। ২৮ জুন (শুক্রবার) বিকেলে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে এক স্কুলছাত্রীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। একই থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে আরিফুল ইসলামের পাশাপাশি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জুলফিকার ওরফে রফিকুল ইসলামকেও আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন র্যাব-১১–এর উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) আবদুল আজিজ।
ধর্ষণের মামলার এজাহারে ভিকটিমের বাবা উল্লেখ করেছেন, অক্সফোর্ড হাইস্কুলে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সময় তার মেয়েকে শিক্ষক আরিফুল একাধিকবার ধর্ষণ করেন। লোকলজ্জার ভয়ে তারা বিষয়টি এত দিন গোপন রাখেন। শুধু তার মেয়েকেই নয়, আরও ২০ থেকে ২৫ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন শিক্ষক আরিফুল ইসলাম।
এ বিষয়ে র্যাব-১১–এর কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বলেন, ছাত্রীদের পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া বা ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অথবা কম্পিউটার গ্রাফিকসে আপত্তিকর ছবি তৈরি করে তা দেখিয়ে ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেল করতেন আরিফুল। এভাবে গত পাঁচ বছরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছেন তিনি। ফাঁদে ফেলে কোনো কোনো শিক্ষার্থীর মাকেও ধর্ষণ করেছেন তিনি। সেসব দৃশ্য আবার মুঠোফোনে ভিডিও করে রাখেন তিনি।