নুসরাত হত্যা: দুই বান্ধবীর সাক্ষ্য গ্রহণ
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০১৯, ১৩:৫০
যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুন দিয়ে হত্যা মামলায় নুসরাতের দুই বান্ধবীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।
০১ জুলাই (সোমবার) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশিদের আদালতে সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নুসরাতের দুই বান্ধবীর সাক্ষ্য নেয়া হয়। আদালতে সাক্ষ্য দেন নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানা ফূর্তি।
আদালতের পিপি হাফেজ আহমেদ জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা নিশাত সুলতানাকে জেরা করেছেন। পরবর্তীতে নাসরিন সুলতানা ফূর্তির অর্ধেক জেরা হয়েছে। এর আগে নুসরাতের বড়োভাই মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়।
গত ২৭ জুন (বৃহস্পতিবার) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশিদের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেয়ায় পাঁচজন মিলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যৌন নিপীড়নের মামলায় কারাগারে গেলেও জেলে বসেই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি এবং আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও ফেনী আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ মোট ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
চার্জশিটে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- এস এম সিরাজউদ্দোলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম(২০), মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের(২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), মোহাম্মদ শামীম (২০), রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।