সিলেটে প্রকাশ্যে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি
প্রকাশ : ১০ মে ২০১৯, ২২:২৫
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসককে ছুরি দেখিয়ে প্রকাশ্যে ‘ধর্ষণ ও হত্যার’ হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতা। ৯ মে (বৃহস্পতিবার) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
ঐ চিকিৎসক এর সহকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে পেটে ব্যথা নিয়ে এক রোগী সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। রোগীর সাথে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করায় 'চিকিৎসার সুবিধার্থে' চিকিৎসক ডা. নাজিফা আনজুম নিশাত তাদের বাইরে যেতে বলেন। কিন্তু তবু সবাই এসে ভিড় করতে থাকায় তিনি পুনরায় তাদের বাইরে যেতে বলেন। তখন দর্শনার্থীদের সাথে থাকা একজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে।
ডা. নাজিফা আনজুম নিশাত বলেন, রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য আমি সাথে থাকা সবাইকে বাইরে যেতে বলি। কিন্তু তাদের একজন আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করে। আমি ঘটনাটি সিনিয়রদের জানানোর জন্য বের হতে গেলে তিনি কোমর থেকে ছুরি বের করে আমাকে বলেন, "তোর সাহস কত? লাশ ফেলে দেবো"।
ঐ ব্যক্তি তাকে 'রেইপ' করে ফেলার হুমকি দেন বলেও জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হুমকি দেয়া ঐ ব্যক্তির নাম সারোয়ার হোসেন চৌধুরী। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও কাউন্সিলর আজাদুর রহমানের অনুসারী।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ঐ ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ঐ চিকিৎসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করায় তার সাথে ‘তর্ক-বিতর্ক’ হয়েছে।
তবে ডা. নাজিফা আনজুম নিশাত বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘গতকাল যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। যারা এসেছিল তারা উপরে যাওয়ার সময় তুচ্ছ কারণে লিফটম্যানকেও চড় মেরেছে। কে মেরেছে সেটা দেখার জন্যই আমি ছয়তলায় গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি সেখানেও তারা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছে ও হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের বাইরে এসে কর্মবিরতি পালন করেন চিকিৎসকরা। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা কাজে যোগ দেন।