দুই দফা ধর্ষণ, পোশাককর্মীর আত্মহত্যা
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ২৩:০২
দুই দফায় ধর্ষণের শিকার হবার পর আত্মহত্যা করেছেন এক পোশাককর্মী। এই ঘটনায় ২৭ এপ্রিল (শনিবার) গভীর রাতে মো. বাদশা নামে এক উবারচালককে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৮ এপ্রিল (রবিবার) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. সফি উদ্দিনের আদালতে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বাদশা।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ এপ্রিল সকালে চট্টগ্রাম নগরীর মোগলটুলির বাসায় ঐ পোশাককর্মী ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এর প্রেক্ষিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের বোন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বাদশা নিয়মিত মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করত। ক্রমাগত যৌন নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে তার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। মেয়েটি মৃত্যুর আগে ধর্ষণের ব্যাপারে কিছু বলে না গেলেও যৌন হয়রানির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়। অভিযুক্ত বাদশাকে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি থেকে পুরো ঘটনা জানা যায়।
বাদশা’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ জানতে পারে, বাদশাও আগে ঐ মেয়েটির সাথে আগ্রাবাদে একই পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। পোশাককর্মী মেয়েটির সঙ্গে তার তখন থেকেই সম্পর্ক ছিল বলেও দাবি করে সে। বছরখানেক আগে পোশাক কারখানার চাকরি ছেড়ে দিয়ে সে উবারে প্রাইভেট কার চালাতে শুরু করে। বাদশা জানায়, ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় পোশাক কারখানা ছুটির পর বাদশা তাকে প্রাইভেট কারে নিয়ে বেড়াতে বের হয়। একপর্যায়ে নির্জন একটি স্থানে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে গাড়ির ভেতরেই দুইবার ধর্ষণ করে সে। এসময় মেয়েটি জ্ঞান হারায়।
মুখে পানি ছিটিয়েও মেয়েটির জ্ঞান না ফেরায় সে মেয়েটিকে পাঠানটুলিতে তার নিজের বাসায় যায়। সেখানে বাদশা ও তার মা মিলে মেয়েটিকে নিয়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসক মেয়েটির শরীর দুর্বল উল্লেখ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপর বাদশা ও তার মা মেয়েটিকে নিয়ে পুনরায় নিজেদের বাসায় যায়। কিন্তু তার অবস্থার আরও অবনতি হলে রাত দেড়টার দিকে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করে বাদশা পালিয়ে যায়।
পুলিশ পরিদর্শক জহির বলেন, "মেয়েটি হাসপাতালের এক আয়াকে বলেছিল, বাদশা তার মুখ চেপে ধরার পর সে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। এরপর কী হয়েছে তার আর মনে নেই। এই বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়েই ধর্ষণের বিষয়টি উঠে আসে। পরে বাদশাও জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে"।
মেয়েটির বোন জানায়, বাদশা পালিয়ে যাওয়ার পর মেয়েটির ভগ্নিপতি খবর পেয়ে মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যায়। পরদিন সকালে তাকে একা বাসায় রেখে তার বোন কর্মস্থলে যাওয়ার পর সে আত্মহত্যা করে।