যৌন নিপীড়নের আরও প্রমাণ সেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:৪৫
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি ছাড়াও ঐ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল বলে পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
কমিটির সদস্যরা মনে করছেন, মাদ্রাসার গভর্নিং বডি যৌন নিপীড়নের আগের অভিযোগগুলো খতিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে নুসরাতের এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটনা এড়ানো যেত।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার তদন্ত দলের প্রধান এসএম রুহুল আমিন জানান, প্রায় ৬ মাস আগে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুসরাতের এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীকেও যৌন হয়রানি করেছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপ নেয়নি মাদ্রাসার গভর্নিং বডি।
তিনি জানান, পুলিশ সদস্য ছাড়াও এ পর্যন্ত ১৭-১৮ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেয়ায় গত ৬ এপ্রিল পাঁচজন মিলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যৌন নিপীড়নের মামলায় কারাগারে গেলেও জেলে বসেই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি এবং আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
এরা হলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, ইফতেখার উদ্দিন রানা ও মো. ইমরান হোসেন।