৪৬ লাশ হস্তান্তর, বাকিদের শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা

প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:৪৪

জাগরণীয়া ডেস্ক

রাজধানীর চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ৪৬ জনের মরদেহের পরিচয় শনাক্তের পর তা স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি লাশগুলো পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় তা শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা প্রয়োজন। ২১ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) দুপুর ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ২২টি মরদেহ এবং সন্ধ্যা থেকে রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত বাকি ২৩টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

চকবাজার থানার ওসি শামীমুর রশিদ তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৪৬ জনের মরদেহ শনাক্ত করা গেছে, সবগুলোই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে মোট ৭০টি  মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানোর কথা জানানো হলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন তাদের কাছে ৬৭টি লাশ এসেছে। 

তবে মরদেহের সংখ্যার হিসেব নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক তারেক হাসান ভূইয়া বলেন, "আমাদের হিসাবে লাশ ৭০টি। তবে কয়েকটা ব্যাগে খণ্ড খণ্ড ডেডবডি ছিল। সম্পূর্ণ ডেডবডি হয়ত ৬৭টি হতে পারে। কয়েকটি লাশ এতটাই পুড়েছে যে চেনার ‍উপায় নেই"।

ডা. সোহেল মাহমুদও বলেন, "আমাদের কাছে ফুল বডি এসেছে মোট ৬৭টি। তবে আলাদা ব্যাগে কিছু খণ্ডিত দেহাবশেষ আছে। সেগুলো এই মরদেহগুলোরই কি না তা আমরা পরীক্ষা করে দেখব। আপাতত সবগুলো ডেডবডির স্যাম্পল রেখে দিচ্ছি।"

এদিকে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে জায়গা না হওয়ায় এবং মর্গের ফ্রিজ নষ্ট থাকায় সবগুলো মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। তাই মরদেহগুলো বিভিন্ন হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হচ্ছে। এসব মরদেহের ডিএনএ নমুনা রেখে দেওয়া হয়েছে।

ডা. সোহেল মাহমুদ আরো বলেন, "যাদের স্বজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে, তারা রবিবার থেকে ডিএনএ নমুনা সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের কাছে জমা দেবেন। সংরক্ষণ করা কোনো মরদেহের সঙ্গে ডিএনএর মিল পাওয়া গেলে লাশ হস্তান্তর করা হবে"।

এদিকে ঢামেক এর বার্ন ইউনিটে ভর্তি ৯ জনের অবস্থা এখনো আশংকাজনক। আহতদের মধ্যে ছয়জনেরই শ্বাসনালীসহ শরীরের ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। 

উল্লেখ্য, ২০ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) রাত সাড়ে ১০টার পর চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ওয়াহিদ ম্যানসনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন।

এলাকাবাসী বলছেন, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে।

খবর পেয়ে এ আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম। 

ওই অগ্নিকণ্ডে সর্বশেষ ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়। আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ; খোঁজ নেই অনেকের।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত