বাবার অপরাধের সাক্ষী দিলো মেয়ে
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৩৯
দুই বছরের শিশু আয়েশাকে ‘ধর্ষণচেষ্টা’র পর ছাদ থেকে নিচে ফেলে হত্যা করে বাবা নাহিদ, আদালতে নিজের বাবার অপরাধের কথা এভাবেই ফাঁস করেছেন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরী মেয়ে। রাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় তিনতলা থেকে ফেলে শিশু আশামণি ওরফে আয়েশাকে খুন করা নাহিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর নাহিদ এখন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আশামণির মা রাজিয়া সুলতানা জানান, ৫ জানুয়ারি (শনিবার) সন্ধ্যায় বড় বোন ইরামণির ঘরে ছিল আশামণি। কিন্তু খেলতে খেলতে সে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। গ্যাস না থাকায় সেদিন পাশের বাড়িতে রান্না করতে গিয়েছিলেন রাজিয়া। ফিরে এসে আশামণিকে দেখতে না পেয়ে বাড়ির আশেপাশে খুঁজতে থাকেন। সেসময় পাশের বাড়ির এক ছেলে এসে ইরামণিকে জানায় বাড়ির কাছে চারতলা ভবনের সামনে আশামণি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ঐ অবস্থায়ই আশামণিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজিয়া সুলতানা আরো জানান, চারতলা ঐ ভবনের মালিক ইকবাল হোসেন। তার ছোট ভাই নাহিদ হোসেন ভবনের তিনতলায় দুই ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন। আশামণিকে উপর থেকে ফেলে দিয়ে খুনের ব্যাপারে কেউ কিছু স্বীকার না করায় পুলিশ এসে ভবন মালিকের ছেলেকে আটক করে। পরে ঐ ছেলে জানায় তার চাচা নাহিদ এই কাজ করে থাকতে পারে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গেন্ডারিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন-অর-রশীদ জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নাহিদ পালাবার অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে ধরতে সক্ষম হয়।
এদিকে নাহিদের ১৪ বছর বয়সী মেয়ে ৮ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ১৬৪ ধারায় ঢাকার আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ বলেন, আশামণির খুনের ব্যাপারে নাহিদের মেয়ে আদালতকে বিস্তারিত বলেছে। নাহিদের মেয়ে সেদিন সন্ধ্যায় আশামণিকে তার বাবার ঘরে দেখেছিল। এসময় আশামণি জোরে চিৎকার করেছিল।
নাহিদের মেয়ে বলে, বাবা আমায় ধমক দিয়ে চলে যেতে বললে আমি অন্য রুমে চলে যাই। পরে তিনি (নাহিদ) শিশু আয়েশাকে তিন তলার জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দেন।
আশামণির মৃত্যুর বিচার চেয়ে মা রাজিয়া সুলতানা বলেন, "আমার মেয়ের খুনী নাহিদের ফাঁসি চাই। আর কিছু চাই না"।