ধর্ষণে ব্যর্থ হয়েই দুই শিশুকে হত্যা
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:১৪
লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ডেমরার শিশু নুসরাত (৪) ও ফারিয়াকে (৫) ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন গোলাম মোস্তাফা। ভাই আজিজুল বাওনিয়াকে সাথে নিয়ে শিশু দুটিকে ধর্ষণও করতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু সেই চেষ্টাতে ব্যর্থ হয়েই শিশু দুটিকে খুন করেন তারা। রাজধানীর ডেমরায় দুই শিশু খুনের ঘটনায় ৯ জানুয়ারি (বুধবার) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফরিদ উদ্দিন।
ডিসি ফরিদ উদ্দিন বলেন, ৭ জানুয়ারি (সোমবার) রাতে ডেমরার কোনাপাড়ার শাহজালাল রোডের নাসিমা ভিলার নিচতলার একটি কক্ষ থেকে ফারিয়া ও নুসরাতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৮ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দিনগত রাতে যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামি মোস্তফা (২৮) ও আজিজুলকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়।
হত্যার কারণ সম্পর্কে ডিসি বলেন, লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে দেওয়ার নাম করে শিশু দু’টিকে প্রথমে বাসায় ডেকে আনা হয়। ঘরে ডেকে প্রথমে শিশু দু’টিকে নিজের স্ত্রীর লিপস্টিক দিয়ে সাজান মোস্তফা। এরপর আজিজুল ও মোস্তফা ইয়াবা সেবন করে উচ্চ শব্দে গান ছাড়েন। পরে শিশু দুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তারা চিৎকার করে। চিৎকারের এক পর্যায়ে ফারিয়াকে গলা টিপে হত্যা করেন আজিজুল এবং নুসরাতকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মোস্তফা।
ডিসি বলেন, শিশুরা চিৎকার করলেও উচ্চ শব্দে গান বাজানোর কারণে বাইরের কেউ শুনতে পায়নি।
ফরিদ উদ্দিন জানান, হত্যার পর আজিজুল পালিয়ে গেলেও মোস্তফা দুই শিশুর মরদেহ নিয়ে বাসায় থাকেন। এক পর্যায়ে খাটের নিচে মরদেহ রেখে দেন। কিন্তু সন্ধ্যায় মোস্তফার স্ত্রী গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফিরলে স্বামীর অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করেন। মেঝেতে শিশুদের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন টের পায় এবং পুলিশকে খবর দেয়। কিন্তু পুলিশ পৌঁছানোর আগেই মোস্তফা পালিয়ে যান।
তিনি আরো বলেন, একটি বিকৃত মানসিকতা থেকে এ ধরণের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। তাছাড়া মাদকাসক্তি এর বড় কারণ। আর যে সমস্ত জায়গায় এসব ঘটনা ঘটছে সেখানে অভিভাবকরা একটু কম সচেতন।
এ ঘটনায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ ও আলামত সরবরাহ করে সব ধরণের সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।