'নির্যাতনের দুই-তৃতীয়াংশই পরিবারিক সহিংসতা'
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:১৫
দেশে নির্যাতনের শিকার যেসকল নারীরা আইনের দ্বারস্থ হন, তার দুই তৃতীয়াংশই (৬৬%) পারিবারিক সহিংসতার শিকার বলে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ এর এক গবেষণায় উঠে এসেছে। ২৬ নভেম্বর (সোমবার) ঢাকার ধানমণ্ডিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে 'বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার উপর আলোকপাত: প্রবণতা এবং সমাধান' শীর্ষক এ গবেষণা প্রবন্ধের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
দেশের ২০টি জেলায় পুলিশ, আদালত, এনজিও এবং জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরামে (জেএনএনপিএফ) আসা ২৮০০ অভিযোগের ভিত্তিতে চালানো এ গবেষণায় দেখা যায়, এর মধ্যে ১৮০০টি ঘটনায় নারীরা তাদের বাসগৃহেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই সংখ্যা মোট অভিযোগের ৬৬ শতাংশ।
গবেষণার তথ্য তুলে ধরে গবেষক আহমেদ ইব্রাহিম বলেন, "আমাদের কাছে নারী নির্যাতন বলতেই শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠে। অথচ অধিকাংশ নারীই নিজ গৃহে নির্যাতিত হচ্ছেন। শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের বাইরেও অর্থনৈতিক, মানসিক ও পরিবারে দমন এবং নিয়ন্ত্রণে থাকাও নির্যাতন।"
তিনি বলেন, "নির্যাতনের শিকার নারীদের মধ্যে কেবল ১ দশমিক ১ শতাংশ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। যারা অভিযোগ করেন, তাদের মধ্যে মাত্র ৩ দশমিক ১ শতাংশ নারী নিজের পক্ষে বিচার পান। বাকি ৯৬ দশমিক ৯ শতাংশ অভিযোগ আদালতে খারিজ হয়ে যায়; অনেক ক্ষেত্রে শুনানিও করা হয় না"।
নারীর সুরক্ষায় যৌতুক ছাড়া অন্য কোনো সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশে সরাসরি কোনো আইন নেই বলেও জানান তিনি।
অ্যাকশন এইডের গবেষণাপত্রে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত অধিকাংশ নারী নির্যাতনের সংবাদ ধর্ষণ সংক্রান্ত।
কিন্তু পারিবারিক সহিংসতার সংবাদও গণমাধ্যমে বেশি করে তুলে ধরা জরুরি বলে মন্তব্য করেন আহমেদ ইব্রাহিম।
মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির বলেন, "নারীরা সাধারণ একটি ডায়েরি করতে থানায় গেলেই কী সব আচরণের সম্মুখীন হতে হয় তা সবারই জানা। সেখানে নিরাশ হতে হয়; অভিযোগ না তোলার জন্য যতভাবে পারা সম্ভব বাধা দেওয়া হয়"।
গণমাধ্যমও নারীর ওপর সহিংসতার সঠিক চিত্র তুলে ধরছে না বলে অভিযোগ করেন খুশি কবির।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, জেএনএনপিএফের নির্বাহী পরিচালক মমতাজ আরা রুমি এবং দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।