‘রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য মিয়ানমারে বিনিয়োগ করুন’
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩৪
জাতিগত নিধনের শিকার মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুরা যাতে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পর শিক্ষাসহ অন্যান্য অধিকার পায় সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৪ সেপ্টেম্বর (সোমবার) জাতিসংঘের সদর দফতরে স্থানীয় সময় বিকেলে‘ইনভেস্টমেন্ট ফর এডুকেশন অব উইমেন অ্যান্ড গার্ল’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এই আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মিয়ানমারে বিনিয়োগের আহবান জানাচ্ছি- যেন এই শিশুরা সেখানে ফিরে যাওয়ার পর শিক্ষাসহ সব অধিকার পায়।
নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের এখন অন্য দেশের নৃশংসতার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এগারো লাখ মানুষ এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। যে মাটিতে শত শত বছর ধরে তারা বসবাস করে আসছিল,সেখান থেকে তাদের পালিয়ে আসতে হয়েছে সহিংসতা আর গণহত্যা থেকে বাঁচার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই উদ্বাস্তু এবং বলপূর্বক বিতাড়িত মানুষের বিষয়টি সংবেদনশীল এবং স্পর্শকাতর। তারা হতাশ, নিপীড়িত। সহিংসতা ও অত্যাচারের ভয়ানক অভিজ্ঞতা তারা বহন করছে। এদের মধ্যে অনেকেই নিজের দেশে কয়েক দশক ধরে অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে, সেজন্য ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
জাতির জনকের সংগ্রামের কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমার বাবা, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহিংসতা, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন আজীবন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উদ্যোগে আয়োজিত এ গোলটেবিল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে তিনটি প্রস্তাব দেন।
প্রথমত সংঘাত, জাতিগত নিধন এবং গণহত্যা থেকে পালিয়ে আসা শিশুদের মানসিক আঘাত লাঘবে এবং সামাজিক প্রয়োজন মেটাতে নজর দেয়া।
দ্বিতীয়ত সংঘাত ও জাতিগত নিধন থেকে পালিয়ে যাওয়া শিশুরা সাধারণ স্কুলে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্যায় পড়তে পারে। তাই তাদের জন্য অনানুষ্ঠানিক এবং দৈনন্দিন জীবনের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
তৃতীয় বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুরা এখন ভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশে বসবাস করছে। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, জাতিসত্তা এবং ভাষা অনুযায়ী এই শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা।