দেশব্যাপী ‘মীনা দিবস’ উদযাপিত
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪১
প্রতি বছরের মতো এ বছরও নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হলো ‘মীনা দিবস-২০১৮’।
২৪ সেপ্টেম্বর (সোমবার) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মিলনায়তনে মীনা দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘মায়ের দেয়া খাবার খাই, মনের আনন্দে স্কুলে যাই’।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণাশিক্ষা মন্ত্রী মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কেবলমাত্র মেধার ভিত্তিতেই প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ হয়। যারা টাকা দিয়ে চাকরি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ধরনা দেন, দেন-দরবার করেন তারা টাকাটাই হারাবেন, চাকরি পাবেন না। কিছু কুচক্রী মহলের উদ্দেশ্যই থাকে ধোঁকা দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা।’
মীনা চরিত্র শিশুদের আদর্শ চরিত্র উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মীনা চরিত্র নারী শিশুদের একটি স্বপ্নের চরিত্র। মীনা নারী জাতির মহানায়ক। মীনা যুগের পর যুগ ১০ বছর বয়সে থেমে আছে, আমরা তাকে বড় হতে দেব না। কারণ, মিনাকে এ বয়সেই মানায়। মীনা অপ্রতিরোধ্য, মীনা সকল নারী শিশুর আদর্শ।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক উন্নয়নের পাশাপাশি বাল্য বিবাহ, পরিবারে অসম খাদ্য বন্টন, শিশুশ্রম রোধ ইত্যাদি বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা ও কার্যকরী বার্তা পৌছানোর ক্ষেত্রে ‘মীনা’ চরিত্রটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
‘মায়ের দেয়া খাবার খাই, মনের আনন্দে স্কুলে যাই’ যা ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষার মানন্নোয়ন ও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন বক্তারা।
শিশুদের অংশগ্রহণে মীনা বিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও আয়োজন করা হয়েছিল পাপেট ও মাপেট শো এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
এদিকে, রাজধানীর পাশাপাশি সারা দেশে বিদ্যালয়ে যেতে সক্ষম শতভাগ শিশুর বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিতকরণ এবং ঝরে পড়া রোধে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে উদযাপিত হলো ‘মীনা দিবস’। দিবসটি উপলক্ষে জেলা/উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে র্যালি, মীনা বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, যেমন খুশি তেমন সাজো ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি সংস্থা প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর ‘মীনা দিবস’ উদযাপন করছে।
১৯৯১ সালে একজন ১০ বছর বয়সী বালিকা হিসেবে মীনা চরিত্রের সৃষ্টি। জনপ্রিয় কার্টুন ‘মীনা’ নামের বালিকা চরিত্রটি বিশেষ করে গ্রামে মেয়ে শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার ভূমিকা পালন করে থাকে। সমাজের কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, বিভেদ ও বৈষম্য দূর করে সমৃদ্ধ জাতি গঠনের বার্তাসমূহ বিনোদনমূলক কার্টুন চরিত্র মীনার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।
মীনা চরিত্রটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল তথা দক্ষিণ এশিয়ার মেয়ে শিশুদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি চরিত্র। ইতোমধ্যে অনেক বিষয়ে মীনা কার্টুন পর্ব ও মীনা বই তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে চরিত্রটি শিশু ছাড়াও সব বয়সের মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে।