শিশু আকিফা হত্যা: বাস চালক রিমান্ডে
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:০৮
শিশু আকিফা হত্যা মামলার প্রধান আসামি গঞ্জেরাজ পরিবহনের বাসের চালক মহিদ মিয়াকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
১৯ সেপ্টেম্বর (বুধবার) দুপুরে কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম এম মোর্শেদ শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কুষ্টিয়া আদালতের জিআরও শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) আজাহার আলী রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর গঞ্জেরাজ পরিবহনের মালিক মো. জয়নাল আবেদীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিল র্যাব। ১০ সেপ্টেম্বর তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালতে একই সময়ে গঞ্জেরাজ বাসের চালক মহিদ মিয়া আত্মসমর্পণ করে। এরপর তাদের দু’জনের আইনজীবী আদালতের মাধ্যমে তাদের জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন দেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমন কাদেরী মামলাটি ৩০২ ধারায় সংযোজন করার জন্য একই আদালতে আবেদন করেন। আবেদনটি আদালত মঞ্জুর করেন। একই সাথে তাদের জামিন আবেদন বাতিলের আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুর জেলা সদরের বঙ্গেশরদী এলাকা থেকে কুষ্টিয়া র্যাব-১২’র একটি দল বাসটির চালক মহিদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে । গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক সুমন কাদেরী মহিদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। বুধবার সকালে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট (মঙ্গলবার) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী থেকে ফরিদপুরগামী গঞ্জেরাজ পরিবহনের একটি বাস চৌড়হাস মোড়ের কাউন্টারে এসে থামে। ঠিক সে সময় থেমে থাকা বাসের সামনে দিয়ে এক বছরের শিশুকন্যা আকিফাকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন মা রিনা বেগম। হঠাৎ কোনো হর্ন ছাড়াই চালক খোকন বাসটি চালিয়ে এসে রিনাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যান। এতে মায়ের কোল থেকে রাস্তার ওপর ছিঁটকে পড়ে আহত হয় আকিফা। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাথায় আঘাত পাওয়ায় শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওইদিন সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। ২৯ আগস্ট সকাল ১১টায় সেখানে আকিফা অস্ত্রপচার করা হয়। পরে ৩০ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে, বাসের ধাক্কা দেওয়ার ভিডিওটি স্থানীয় একটি দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লে তা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ফুঁসে ওঠে সচেতন মহল। প্রতিবাদে বুধবার চৌড়হাস মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা।
মানববন্ধনে ঘাতক গঞ্জেরাজ পরিবহনের চালককে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এরপর ওই শিশুর পিতা মো. হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে বাস চালক, হেলপার ও মালিকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (কুষ্টিয়া মডেল থানার মামলা নং-৪১, তাং-৩০-০৮-২০১৮, ধারা-২৭৯/৩৩৮-ক/৩০৪-খ দণ্ডবিধি)।