শিশু আকিফার মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০১৮, ১৬:২৩
কুষ্টিয়ায় বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে শিশু আকিফার মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- গঞ্জেরাজ বাসের মালিক জয়নাল মিয়া, চালক খোকন ও সুপারভাইজার ইউনুস মাস্টার। আসামিদের সবার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়।
৩০ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাতে নিহত আকিফার বারা হারুন উর রশিদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আকিফার বাবা মেয়েকে হত্যার ঘটনায় ঘাতকদের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা নিতে পুলিশের কাছে আবেদন করেন। তবে সড়ক পরিবহন আইন পাস না হওয়ায় পুলিশ মামলাটি ৩০৪ ধারায় হত্যাচেষ্টার মামলা হিসেবে এজাহারভুক্ত করে।
আকিফার বাবা হারুন উর রশিদ বলেন, আমার মেয়েকে ওরা ইচ্ছা করে বাসচাপা দিয়ে হত্যা করেছে। আমি পুলিশের কাছে আবেদন করেছিলাম হত্যা মামলা নিতে। কিন্তু পুলিশ আমাকে নানাভাবে বুঝিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা দিয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা ভিডিওটি দেখলেই বুঝতে পারবেন, বেপরোয়া বাসচালক আমার স্ত্রীকে তিনবার ধাক্কা দিয়েছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাক্কায় আমার মেয়ে তার মায়ের কোল থেকে পড়ে যায়নি। তৃতীয়বার ধাক্কা মারার পর আমার মেয়ে তার মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসিরউদ্দিন বলেন, শিশু আকিফার ঘটনায় ৩০৪ (হত্যাচেষ্টা) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। আসামি ধরতে অভিযান চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে যাবে। সড়ক পরিবহন আইন পাস না হওয়ায় মামলাটি ৩০২ (হত্যা) ধারায় নেয়া সম্ভব হয়নি।
শিশুটির বাবা ব্যবসায়ী হারুন জানান, গত ২৮ আগস্ট (মঙ্গলবার) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী থেকে ফরিদপুরগামী গঞ্জেরাজ পরিবহনের একটি বাস চৌড়হাস মোড়ের কাউন্টারে এসে থামে। ঠিক সে সময় থেমে থাকা বাসের সামনে দিয়ে এক বছরের শিশুকন্যা আকিফাকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন মা রিনা বেগম। হঠাৎ কোনো হর্ন ছাড়াই চালক খোকন বাসটি চালিয়ে এসে রিনাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যান। এতে মায়ের কোল থেকে রাস্তার ওপর ছিঁটকে পড়ে আহত হয় আকিফা। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাথায় আঘাত পাওয়ায় শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওইদিন সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। বুধবার সকাল ১১টায় সেখানে আকিফা অস্ত্রপচার করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে, বাসের ধাক্কা দেওয়ার ভিডিওটি স্থানীয় একটি দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লে তা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ফুঁসে ওঠে সচেতন মহল। প্রতিবাদে বুধবার চৌড়হাস মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা।
মানববন্ধনে ঘাতক গঞ্জেরাজ পরিবহনের চালককে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।