পাবনার সেই সাব রেজিস্ট্রারের জামিন
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০১৮, ১৩:১৫
ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে গ্রেপ্তার পাবনার আটঘরিয়া সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহানের জামিন দিয়েছেন আদালত। তবে একই মামলায় আদালত মোহরার আশরাফুল আলমকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। জামিনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন দুদক সমন্বিত কার্যালয় পাবনার উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক।
১১ জুলাই (বুধবার) দুপুরে পাবনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবুল বাসেত মো. বুলুর আদালত এই আদেশ দেন।
দুদক সূত্র জানায়, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গত ১০ জুলাই সন্ধ্যায় পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহান (২৮) ও মোহরার আশরাফুল আলমকে (৪০) হাতেনাতে আটক করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় ঘুষের ৬২ হাজার টাকা। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আবদুল করিম ও দুদক পাবনার উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক।
দুদক সমন্বিত কার্যালয় পাবনার উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক জানান, জমির খাজনা-খারিজ করে দেওয়ার নামে দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আসছিলেন ইশরাত জাহান ও আশরাফুল আলম। ৪ টি দলিল রেজিস্ট্রির জন্য ১৪ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহান। কিন্তু ঘুষের টাকা না দেওয়ায় দলিল রেজিস্ট্রির না করে অভিযোগকারীকে ঘুরাতে থাকেন। এরপর অভিযোগকারী দুদককে অবহিত করলে দুদকের কর্মকর্তারা বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই সাব-রেজিস্ট্রারকে টাকা দেয়ার পরামর্শ দেন। টাকা লেনদেনের সময় দুদক কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে হাতেনাতে ঘুষের টাকাসহ ঐ দুজনকে আটক করেন। এসময় দলিল লেখক আশরাফুল আলমের কাছ থেকে ঘুষের ৪৮ হাজার টাকা উদ্ধার করে দুদক পাবনার কর্মকর্তারা।
এ সময় দুদক কর্মকর্তারা তাদের কাছে থাকা ঘুষের টাকার সিরিয়াল নম্বর মিলিয়ে অভিযোগের সত্যতা পান।
আবু বকর সিদ্দিক আরো বলেন, পাবনা জেলার নয়টি উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন ১০ লক্ষাধিক টাকার ঘুষ লেনদেন হয়। আমরা এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। কয়েকজন দুর্নীতিবাজ সাব-রেজিস্ট্রারকে এরই মধ্যে মৌখিক সতর্ক করা হয়েছে। তার পরও তারা কর্ণপাত করছেন না। আমরা খুব শিগগির তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া মানুষজনকে জিম্মি করে দলিল লেখক সমিতির নামে যে টাকা আদায় করা হয় সে বিষয়েও আমরা খতিয়ে দেখছি।
পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আটকের ঘটনায় সারা দেশের সাব-রেজিস্ট্রাররা ক্ষুব্ধ। আটঘরিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার ট্র্যাপের (ফাঁদ) শিকার। আমরা এর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি দেব।
পাবনা জেলা রেজিস্ট্রার মণীন্দ্র নাথ বর্মণ জানান, আটঘরিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহানকে আটকের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। তিনি এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।