‘বাংলাদেশ নতুন এক যুগে প্রবেশ করলো’
প্রকাশ : ১৩ মে ২০১৮, ০০:৪৮
'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন এক যুগে প্রবেশ করলো। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশও স্যাটেলাইট ক্লাবের গর্বিত সদস্য হলো'- ১১ মে (শুক্রবার) দিবাগত রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের লঞ্চিং স্টেশন থেকে স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণের পরপরই জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ এবং নির্যাতিত মা-বোনদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃত হবে। তিনি অনুধাবন করেছিলেন বহির্বিশ্বের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগ রক্ষা করতে না পারলে অগ্রগতি ও প্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এজন্য স্বাধীনতার মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৭৪ সালে তিনি রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় প্রথম উপগ্রহ ভূকেন্দ্র স্থাপন করেন, যার সাহায্যে তথ্য-উপাত্ত আদান প্রদানের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ তৈরি হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ আমরা জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আরেক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছি নিজস্ব উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে। তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে আজ যুক্ত হতে যাচ্ছে স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ। আজ থেকে আমরাও স্যাটেলাইট ক্লাবের গর্বিত সদস্য হলাম। প্রবেশ করলাম এক নতুন যুগে।’
বাংলাদেশের স্যাটেলাইট দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ছাড়াও এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে সেবা প্রদান করা যাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই স্যাটেলাইট দিয়ে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, কাজাকস্তান এবং উজবেকিস্তানের অংশ বিশেষে সেবা প্রদান সম্ভব হবে।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বিটিআরসির থেকে প্রকল্প গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিটিআরসি, প্রকল্প এবং স্যাটেলাইট কোম্পানির কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
এছাড়া নির্মাতা ও উৎক্ষেপণকারী উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের, এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও জনগণকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান তাদের কক্ষপথ বাংলাদেশকে ভাড়া দেওয়ার জন্য।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য যেন পূরণ হয় সে জন্য দেশবাসীর দোয়াও চান প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ ১১ মে (শুক্রবার) বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। ওই সময় স্যাটেলাইটটিকে নিয়ে মহাকাশের পথে ছুটে যায় উৎক্ষেপণ যান ফ্যালকন ৯। এর আগে ১০ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের দিন ধার্য থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত হয়।