‘নারী উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থনের আহবান’
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০১৮, ১২:৫৫
নারী উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন জানাতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ।
গত ২১ মার্চ (বুধবার) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চলতি কমিশন অন দ্য স্টাটাস অব উইমেন (সিএসডব্লিউ)-এর ৬২তম সেশনের সাধারণ বিতর্কে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ এমপি একথা বলেন। নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২৩ মার্চ (শুক্রবার) এ কথা জানানো হয়।
বক্তব্যে মেহের আফরোজ বলেন, বাংলাদেশ সরকার নারী উন্নয়নে সকলের‘অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি’গ্রহণ করেছে। এনজিও, সিভিল সোসাইটি এবং অন্যান্য অংশীজন সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নিতে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘের বলিষ্ঠ সমর্থন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই প্রথম নারীর মর্যাদা উচ্চতর স্থানে তুলে ধরার প্রক্রিয়া শুরু করেন। জাতির পিতার পথ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার নারী ও শিশু উন্নয়নে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ র্যাংকিং ২০১৭-তে বাংলাদেশ ২৫ ধাপ উপরে ওঠে ৪৭তম অবস্থানে পৌঁছেছে যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বহুবিধ পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে, নারী উন্নয়ন সংক্রান্ত নীতিগত নির্দেশিকা প্রণয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সৃষ্টি, জীবনমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান, ক্ষুদ্র-ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সৃষ্টির মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, নারী বান্ধব ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং মেয়েদের সুরক্ষা ও এগিয়ে নেয়ার প্রকল্পের কথা।
এছাড়া তিনি ‘আশ্রয়ণ’, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ ও ‘জয়িতা’সহ বাংলাদেশে নারীদের সহযোগিতা, উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদানে বিভিন্ন প্রকল্প/পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার গৃহীত এ সকল পদক্ষেপের ফলে গ্রামীণ নারীরা জাতীয় আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ডের মূল ধারাতে উঠে আসছে এবং ধাপে ধাপে অতি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স- এ জানুয়ারি ২০১৮ এর তালিকায় বাংলাদেশ ৩৪তম অবস্থানে উন্নীত হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত নারীর সক্রিয় এবং ব্যাপক অংশগ্রহণ রয়েছে যা বাংলাদেশকে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ক্যাটাগরিতে ১৫৫টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে উন্নীত করেছে।
তিনি চলমান রোহিঙ্গা সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই সঙ্কট মোকাবিলায় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানটিতে বাংলাদেশ ডেলিগেশনের সদস্য কাজী রোজী এমপি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফয়জুর রহমান চৌধুরী, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব কাজী মাফরূহা সুলতানাসহ চলতি সিএসডব্লিউ’র ৬২তম অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ ডেলিগেশনের অন্যান্য সদসগণ উপস্থিত ছিলেন।
৬২তম সিএসডব্লিউ’র সভাপতি জাতিসংঘে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মিজ গেরাল্ডীন বায়ারনি ন্যাসন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
সূত্র: বাসস